এ এক এমন কাল, অন্ধকার কালো হতে কালোতর হয়ে
কালোতম হয়ে যায়। দূরত্ব কেবলি বেড়ে যায় ক্রমান্বয়ে
মালী আর গোলাপের মধ্যে। উদাসীনতায় উদ্যানের শোভা
আজ পলাতক আর পুষ্পবিকাশের
আয়োজন ভয়াবহভাবে লোপ পায়
কাঁটাগুল্ম আর বুনো ঘাসের তাণ্ডবে।
আমিও ছিলাম মালী অপরূপ এক বাগানের। এখন সে
উদ্যান এবং
দণ্ডিত আমার মধ্যে বিচ্ছিন্নতা হামাগুড়ি দেয়
শজারুর ধরনে, দেখছি ক্রোধী ভীমরুল আর বিষপোকা
কী দ্রুত ক্ষইয়ে দিচ্ছে ফুলের যৌবন, নিচ্ছে লুটে
প্রবল সন্ত্রাসে নিরুপমা বাগানের
স্মিত, স্নিগ্ধ রূপ আর আমার নিজেরই
প্রবেশাধিকার নেই, দূরত্ব বিপন্ন করে এই আমাকেই।
বসে থাকি চুপচাপ আপন ঘরের
চেয়ারে প্রায়শ, নিঃসঙ্গতা বয়ে যায়
আমার অস্তিত্ব তীব্র ছুঁয়ে, উপরন্তু বারবার
নির্দয় নির্ঘুম রাতে যখন ঝিমুনি আসে, কিছু
বিকট বীভৎস মুখ, লাশকাটা ঘরের গুমোট,
খুব ঠাণ্ডা বিভীষিকা নেচে ওঠে, কারা যেন আমাকে বল্লমে
খোঁচাতে খোঁচাতে অন্ধ, হাহাকারময়
কোনও বধ্যভূমিতে পশুর মতো দ্রুত নিয়ে যায়।
চতুর্দিকে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় প্রত্যক্ষ করেও
কেন জানি অকস্মাৎ অবচেতনের
মেঘালয়ে অভাজন আমার ভেতরে একজন,
যে আমার অন্তর্গত কেউ,
‘আনন্দ, আনন্দ’ বলে ফুলের নীরব উন্মীলন,
মানবীর অলোকসামান্য রূপ, জেদী প্রবীণের
বেঁচে থাকবার দীপ্র সংগ্রাম, শিশুর স্নিগ্ধ হাসি,
জ্যোৎস্না চমকিত সরোবর দেখে জেগে ওঠে আজও।
২২.৪.৯৯