শরতের কিছু লিবিডোতাড়িত উচাটন মেঘ
দূরে ভেসে যায়, ময়ূর আমার প্রাণ।
হঠাৎ কী ক’রে মগজে আমার ক্রীড়াপরায়ণ
সেই কবেকার জবাকুসুমের ঘ্রাণ।
তোমার বাহুতে লীলায়িত জানি বসন্ত রাগ,
তোমার দুচোখে সূর্যোদয়ের গুঁড়া।
তোমার শরীরে মেঘনার খর তরঙ্গঁ নাচে,
জাগে চন্দ্রিল গারো পাহাড়ের চূড়া।
মনে পড়ে সেই পলায়নপর বৈশাখী রোদে
আমরা ছিলাম ধূসর পাথরে ব’সে।
ঢেউগুলি তটে খাচ্ছিল চুমো, জলজ কণারা
সহজ যাত্রী মগজের কোষে কোষে
হঠাৎ তোমার ত্বকে ফোটে আঁশ রূপালী মাছের
গোধূলিবেলায় তোমাকে যায় না চেনা।
আমিও নিমেষে পাখি হয়ে উড়ি, নেচে আসি ঢেউয়ে,
ব্যাকুল আমার চঞ্চুতে লাগে ফেনা।
তোমাকে আমার চষ্ণতে গেঁথে যাব নীলিমায়-
হাওয়ায় ডানার উষ্ণতা যাবে মিশে।
মেঘ মেঘালির নিঃসীম ক্ষেতে ডানার ছোঁয়ায়
জাগবে শিহর স্বপ্নের ঘন শীষে।
এই শতকের করুণ গোধূলি আমাদের চোখে
আনে বিভ্রম, দেখি প্রেতায়িত তরী;
সেই জলযানে আশ্রয় নিয়ে কখনো এগোই,
কখনো প্রখর ভাটায় পিছিয়ে পড়ি।
কিন্তু আমরা গোধূলিমাতাল পাথরেই ব’সে
প্রবল প্যাশনে পুষ্পিত দেহমনে।
কখনো আপন আর্তির ধ্বনি শুনি অবিরল
অতল জলের কাঁকড়ার ক্রন্দনে।
তোমার নিবিড় অঞ্জলি থেকে আনন্দ-বেলী
আমার জীবনে ঝরেছিল অকৃপণ।
কখনো কখনো বেদনার মেঘ এনেছিলে ডেকে,
মরুভু আমার বেদনাবিদ্ধ মন।
দদ্ধ মাটিতে খর পূর্ণিমা এনেছিলে ব’লে
অকুণ্ঠ আজো জানাই কৃতজ্ঞতা।
তোমার নিকট চিরঋণী আমি, কেননা জ্বেলেছ
অমাবস্যায় গহন উজ্জ্বলতা।