রোগশয্যায় তুমি কখনো
শীতের শীর্ণ নদী,
কখনো অনেক দূরের
ছায়াপথ।
তুমি টিপয়ে-রাখা ওষুধের
শিশিকে বলছো-
‘আমি একা।‘
তুমি বাম পাশে ফিরে ভীষণ
আশ্রয়কাঙাল
চড়ুইয়ের চাঞ্চল্যকে বলছো-
আমি ভারী একা।‘
তুমি হাত বাড়িয়ে অখন্ড
‘গীতবিতান’
বুকের খুব কাছে নিয়ে
অজর পংক্তিময় পাতাগুলোকে
বলছো-
‘আমি একা, বড় একা
আমি।‘
তুমি শীতগোধূলিকে আর
রাত্রির কুহকছড়ানো
ঝিল্লীরবকে বলছো-
‘এই একাকিত্ব নিয়ে পারি
না আর।
এই মিথ্যাকে তুমি প্রশ্রয় দিচ্ছ
ব’লে
আমি অভিমানে ছন্দের
লালিত্যকে এক ঝটকায় খুব
ক’রে বলি,
তোমার সঙ্গে সর্বক্ষণ আছে
লোকচক্ষুর আড়ালে আমাদের
দু’জনের রচিত স্মৃতি আর
আমার ভালোবাসা,
তবু কি নিজেকে বলবে তুমি
একাকিনী?