অক্টোবরের প্রায়-দুপুরে জ্যাকসন হাইটস-এর
ত্রিভুজের মতো এক জায়গায় দাঁড়ালাম এক ঝাঁক
ধূসর-নীল কবুতরের মাঝে। আমার হাতে ছোট পলিথিনের
থলিতে কিছু চাল। আমাকে দেখেই
কবুতগুলো ডানায় শব্দ তরঙ্গ তুলে উড়ে গেল
অদূরে। থলি থেকে চাল ছিটোই
পাথুরে চত্বরে, সঙ্গে সঙ্গে কবুতরদের অনেকেই ফিরে
আসে আমার কাছ ঘেঁষে। চত্বরে ছড়ানো
বিস্কুট আর পাউরুটির টুকরোগুলোকে আপাতত উপেক্ষার ছায়ায় রেখে
ওরা আগ্রহে চঞ্চু দিয়ে খুঁটে খেতে থাকে সরু চাল।
আমি গভীর তন্ময়তায় দেখি ওদের
চঞ্চল আহার; মাঝে-মাঝে কবুতরদের
সরে যাওয়া, আবার আমার খুব কাছে ফিরে আসা
চাল কুড়ানোর আশায়। হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে কালো
চামড়ার জ্যাকেট-পরা দীর্ঘকায় এক লোক
হেঁটে আসার সঙ্গে সঙ্গে কবুতরগুলো ভীত-সন্ত্রস্ত
ওড়ে আমার মাথার উপর। লোকটা চলে গেলে আমি আবার
চাল ছিটোই। কবুতরের ঝাঁক নেমে আসে ত্রিকোণ চত্বরে।
জ্যাকসন হাইটস-এর কবুতরগুলো জানে না বিশ্বের
এক মহান চিত্রকর পিকাসো শান্তির শপক্ষে
এঁকেছিলেন ভুবনবিজয়ী এক পায়রা, ওরা জানে না
দেশে-দেশে আজ শান্তি কপোত নিষাদের শরাঘাতে ভীষণ কাতরাচ্ছে।
জ্যাকসন হাইটস-এর ত্রিকোণ চত্বরে দাঁড়িয়ে দেখছি কবুতরগুলোকে
গাঢ় মমতায়। ইতিমধ্যে ওরা জেনে গেছে আমি কোনো হন্তারক নিষাদ নই।
নিইয়র্ক, ৯ অক্টোবর ৯৫