আমার ভেতরে থাকে সর্বক্ষণ একজন পাখি
নিবিড় একাকী।
নড়ে চড়ে; রোদের রঙের মতো, আঁধারের মতো
নরম পালক খসে, আবার গজায় ক্রমাগত
কে জানে কেমন ইন্দ্রজালে! নড়লে গাছের পাতা
অথবা ফুটলে ফুল সে পাখির মাথা
নত হয় কৃতজ্ঞতা হেতু,
কার কাছে জানা নেই তার, হাওয়ায় বিপুল সেতু
গড়ে ওঠে চোখের পলকে, লোক পারাপার চলে
অবিরাম। পাখি কী অনলে
জ্বলে মাঝে-মাঝে, অগ্নিপুষ্প হ’য়ে যায়,
হ’তে পারে মেঘ খন্ড, বুক-চেরা ঘোরে গান গায়।
আমার ভেতরকার পাখিটিকে আহারের অছিলা ছাড়াই
বাহিরে সম্পূর্ণ আনি, পক্ষী রূপে পাহাড়ে দাঁড়াই
সাবলীল, স্বর্ণপক্ষ ঈগলের সঙ্গে সখ্য গড়ি, মেঘে উড়ি,
ঝর্ণাতলে গেলে পায়ে লাগে পাথরের কিছু নুড়ি
সূর্যোদয়ে কি সূর্যাস্তে, এ মুহূর্তে ভেসে যেতে পারি
বিদেশের মমতার তাঁবু ছেড়ে ছুঁড়ে তোমার আপন বাড়ি,
তোমার অন্তরে চঞ্চু ঘষে যদি বলে ফেলি, ‘আজ এ দীনের
জন্মদিনে কোন্ উপহার দেবে, প্রিয়তমা? তুমি তো দিনের
আলোকে অধিক আলো ক’রে
উৎসুক পাখির হৃদয়ের কানা ভ’রে
বলবে গভীর স্বরে, ‘মনপ্রাণ যাহা ছিল সবই
তোমাকেই না চাইতে কবে দিয়ে ফেলেছি, হে কবি।
নিউইয়র্ক, ২০ অক্টোবর ৯৫