চতুর্থ ভাষা

আমরা দু’জন
বৌদ্ধ বিহারের কাছে হল্‌দে পাতাময় পথে দাঁড়িয়ে ছিলাম
কিছুক্ষণ।
হৃদয় আবৃত্তি করে বারবার ভিনদেশী নাম
তোমার এবং মৃদু কথোপথনে
আগ্রহী আমরা বলি কিছু ঝাপসা, গুঁড়ি গুঁড়ি কথা।
জানি না এখানে আজ এসেছি কিসের অন্বেষণে
নিজস্ব অস্তিত্বে নিয়ে গূঢ় ব্যাকুলতা।

যে-ভাষায় স্বতন্ত্র রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন তাঁর গীতাঞ্জলি
যোগাযোগ, গোরা, নষ্ট নীড়
আমি সে-ভাষায় কথা বলি।
যে-ভাষা সহজে তোলে মীড়
আজন্ম তোমার প্রাণে, সে-ভাষায় ঋদ্ধ কাওয়াবাতা
তুষারে ফুটিয়েছেন ফুল। অথচ আমরা কেউ কারো
ভাষায় বলিনি কথা অজ্ঞতাবশত। ঝরা পাতা
গান হয় পায়ের তলায় আর তৃতীয় ভাষায় কিছু গাঢ়
কথা বলি পরস্পর, আধো-বাধো, মানে
ইয়েটস-এর ভাষা তোমার আমার ঠোঁটে
গুঞ্জরিত হয়, দু’টি প্রাণে
বাড়ে মূক ব্যাকুলতা, যেন মন্দিরের গায়ে বয় হাওয়া, ফোটে
সহসা চতুর্থ ভাষা যুগল সত্তায়,
সে-ভাষা চোখের আর স্পর্শাভিলীষী হাতের। তুমি
আর আমি স্বপ্নাচ্ছন্ন ভাষাময় ভাষাহীনতায়
তন্ময় সাঁতার কাটি, খুঁজি যুগ্মতার জন্মভূমি।