কয়েকটি কর্দমাক্ত প্রাচীন কঙ্কাল ছিল নির্জন প্রান্তরে
কুমারী নিশীথে; মাঝে মাঝে রুগ্ন এক কুকুরের
আর্তস্বর শোনা যায়। অদূরে একটি বধ্যভূমি,
যার মাথা ছুঁয়ে জপ করে একা ভাঙাচোরা চাঁদ
গাঢ় রাত, ক’জন জুয়াড়ি এসে জোটে জনহীন
প্রান্তরের এক প্রান্তে, দিশি মদ খায়, কেউ হো হো হেসে ওঠে,
কেউবা ফুঁপিয়ে কাঁদে ইয়ারের কোলে মাথা রেখে,
কখনও আবার কেউ গ্লাশ ভরে নেয়, কেউ কেউ
ভেসে যায় খিস্তিখেউড়ের স্রোতে। একজন অকস্মাৎ
বুভুক্ষু চাঁদের দিকে মাটির সেয়ানা
ঢেলা ছুঁড়ে মারে জোরে; সাতজন জিপ্সি রমণী
ঘাগরা দুলিয়ে জুড়ে দেয় নাচ। নক্ষত্রেরা নৃত্যপর
পায়ের ছন্দিত ঠামে ঝরে পড়ে। কোত্থেকে ক’জন
বিশীর্ণ ভিখিরি এসে তারাগুলো চকচকে টাকা ভেবে নিয়ে
সাগ্রহে কুড়ায় আর একটি আহত ঘোড়া খোঁড়াতে খোঁড়াতে
কানায় কানায় ভরা টলটলে জলাশয়ে মুখ রাখে ধূসর তৃষ্ণায়।
বৃত্তাকারে বসেছে ক’জন শুক্নো ঘাসে। কারও কারও
জিভের ডগায় গল্প নড়ে চড়ে, কেউ বা নিশ্চুপ
অতিশয়; আগুনে ঝলসে যাচ্ছে যুবা
হরিণের গুলিবিদ্ধ শরীর; তিনটি
চমকিত ঘোড়া চোখে অশ্রুকণাসহ অদূরে দাঁড়িয়ে থাকে,
হয়তো খুঁজছে ওরা মেঘলোকে নিরাপদ ডেরা।
তিনটি ব্যথিত ঘোড়া ঘোড়সওয়ারকে বৃত্ত থেকে
তুলে নিয়ে কখনও গহীন গাঙে আর
কখনও-বা ফুলবনে রাখে। ঘুমের ভেতরে ঘুম,
ঘুমে কিছু পরাগ এবং মেঘ, আসমানি নীল লেগে থাকে।