কৈশোরের একটি গোলাপ গাছ আজো
আমার ভেতরে কিছু গোলাপ ফোটায়। মাঝে-মাঝে
বিষাদের মেঘে এসে বসে, বিবাগী স্মৃতির মতো
উড়ে যায়; কখনো আবার বুকে খুলে
দেখায় রুগ্ণতা, পদর্শনী
বিশেষ উল্লেখযোগ্য ভেবে গোলাপ আমার কাছে
স্বপ্ন দাবি করে,
দাবি করে তৃতীয় প্রহরে গূঢ় গোপন শুশ্রুষা।
আমার বুকের রক্তে তার
হোলি খেলা দরকার ব’লেই প্রতীক্ষায়
পাপড়ি মেলে রাখে,
কামাবিষ্ট তরুণীর স্তানাগ্রের মতো
যাবতীয় কুঁড়ি তুলে ধরে,
কখন আমার বুক হয়ে উঠবে কাটার বাসর।
সকল সময় নয় কখনো সখনো,
যখন সর্বস্ব
খুইয়ে একাকী বসে থাকি বাসনার কবরের এক পাশে,
সে গোলাপ গাছ দুলে ওঠে, পুরানো বন্ধুর মতো
দূর মরীচিকা ঠেলে এসে
আমাকে নিবিড়
আলিঙ্গন করে, আমি তাকে শরীরের
প্রতি রোমকূপ দিয়ে দেখি। পিকাসোর
ছবির মতোই পেয়ে যায় নানা মাত্রা কিউবিস্ট আচরণে
ফুলের রমণী আর এও তো জেনেছি
কাল বৈশাখীর ক্রুর ক্রীড়ায় দলিত
মথিত হয় সে বারংবার, কিন্তু হয় না নির্মূল।
তার পাতা ঝরে গেলে ঝরে
হৃদয়ের পল্লব আমার; নিমীলিত হলে তার
চোখ, জ্যোতিহীন হয়ে যায় আমার দু’চোখ, আমি
তার শাখা প্রশাখায় যখন দেখি না
উন্মীলন অপরূপ, দেখি কৃষ্ণ মেঘ,
তখন আমাকে স্থবিরতা শ্মশানে বসিয়ে রাখে,
স্বপ্নগুলি ভাঙা কলসের মতো দু’পায়ের ফাঁকে ইতস্তত
পড়ে থাকে। সে আমার কবিতার সমান বয়সী।