ইট, পাথর, লোহা, সিমেন্ট, সিমেন্ট, লোহা,
পাথার, ইট ডানে বামে
পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ সব দিকে
চেপে বসেছে। গাছ-গাছালির বুকে ইট, পাথর, লোহা
জেঁকে বসেছে আর সহজে সবুজ পাতা
কিংবা ফুল চোখে পড়ছে না কারও। কোকিল
গান গাওয়ার মতো ঠাঁই পাচ্ছে না কোথাও, ঘরে ঘরে
শিশুরা বড় বেশি ধুঁকছে শ্বাসকষ্টে।
মানুষের সাধের তৈরি মেকি, ঠুনকো সভ্যতার
তর্জন গর্জনে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে
নাগরিকদের। নিজেদের কীর্তির
বড়াই তাদের পাঁড়মাতাল ক’রে তুলেছে; অনেকে
আমাকে গাড়ল ভেবে ড্রইংরুমের জম্পেশ
আড্ডায় ভাবনায় ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলছেন।
এমনও হতে পারে, অনুমান করি, আমার
কথাবার্তা শুনে অনেকে মনে মনে
আমাকে পাগলা গারদে ঠেলে দেয়ার
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। মানব মানবীর কথা না ব’লে
আমি কেন কোয়েল, দোয়েল, গাছগাছালি, ফুল, টিয়া,
বুলবুল, ময়ূর ময়ূরী, চড়ই- এদের দিকে
থাকি মনোযোগী। এদের প্রতি যত্নবান না হ’লে
হয়তো দরদালান থাকবে, কিন্তু মানুষ থাকবে না।
অমনোযোগের এই মহামারী কায়েম থাকলে
সর্বনাশ আমাদের করবে গ্রাস। ফুল, পাখি, উদ্ভিদ-
এদের অভিশাপে হয়তো আচানক একদিন
আমাদের উপর হিংস্র পশুর মতোই
ঝাঁপিয়ে পড়বে রুদ্রমূর্তি প্রকৃতি। চতুর্দিকে
পড়ে থাকবে বহুতল সব দালানের ধ্বংসস্তূপ। সর্বনাশ
ড্রাগনের মতো মহানন্দে কাঁটাময় লেজ নাড়বে
জনহীনতায়। কে জানে কখন কোন্ কালবেলায়?
১৬-৩-২০০৩