ডিমের খোলের অন্তস্থলে যেতে ভারি ইচ্ছে হয়।
সেখানে প্রস্থান করি যদি,
কেউ জানবে না,
কখনো আমার কোনো ক্রিয়ার খবর পৌঁছুবে না
কারুর কাছেই।
সেখানে একান্তে বসবাস করবার প্রিয় সাধ
কেবলি লতিয়ে ওঠে হলহল করে
বিভিন্ন প্রহরে।
ফিরিয়ে উদ্বেগ-বিদ্ধ মুখ অত্যাচারী শব্দ থেকে
কুমারী নীরবতার বুক দেখে নেব নাচিকেত চৈতন্যে চকিতে।
ভাঙব না নৈঃশব্দের ধ্যান। করব এমন কাজ, যখন যেমন খুশি,
যা’ লংঘন করে না কখনো
শব্দহীনতার সীমা-যেমন জামার
আস্তিন গোটানো কিংবা চেয়ে থাকা অপলক, অথবা জুতোর
ফিতেটাকে ফুল সযত্নে বানিয়ে তোলা,
স্মৃতির নিকুঞ্জে
কোনো মনোহর শশকের প্রত্যাশায় ব’সে থাকা।
মধ্যে-মধ্যে নীরব থাকতে ভালো লাগে; নীরবতা
ফুল্ল ঊরু মেলে দিলে, মুখ রাখি তার নাভিমূলে।
তখন শব্দের ডাকাডাকি অত্যন্ত বিরক্তিকর,
এমনকি কবিতা লেখাও
ক্লান্ত বারবনিতার সঙ্গে সঙ্গমের মতো ঠেকে,
বুঝি তাই কোনো কোনো কবিতার শিরোনাম লেখার সময়
বড় লজ্জাবোধ হয়।
কোনো রমণীর জন্যে সারারাত ঘুমোতে পারি না,
সৌরভের মদে চুর দূরে বোহেমিয়ান বাগান,
শহরে সার্কাস পার্টি এলো বহুদিন পর আর
স্পঞ্জের স্যান্ডেল পায়ে সন্ন্যাসী সটান হেঁটে যান
দুপুরুক্ষ বেলায় চেলার খোঁজে কোন আখড়ায়,
কোথাও লাইনসম্যান প্রাণপণে দোলাচ্ছে কেবলি
রাঙা বাতি তার,
অথবা আমার বুকে ঝারির মুখের মতো বহু ফুটো আছে-
কী এমন কথামালা এসব যাদের তন্তুগুলো
চাপিয়ে কাব্যের তাঁতে বুনে যেতে হবে রাত্রিদিন?
‘এই যে যাচ্ছেন হেঁটে শরীর খদ্দরে ঢেকে, চোখে পুরু চশমা,
মাথায় পাখির বাসা, ইনি কবি; মানে,
করেন শব্দের ধনে প্রচুর পোদ্দারি’…শুনলেই পায়ে পায়ে
জোর লাগে ঠোকাঠুকি, কামড়ায় বিছে…
যেন খুব সাধ্বী দিবালোকে এভেন্যুর চৌমাথায়
প্রকাশ্যে ইজের খুলে দ্রুত
প্রস্রাব করতে গিয়ে ধরা প’ড়ে গেছি
পুলিশের হাতে।
শব্দ, রাজেন্দ্রানী শব্দ কেবলি পিছলে যায়, যেমন হাতের
মুঠো থেকে স্তন,
তবু ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে গিয়ে
নিতম্ব বুলিয়ে তার নিয়ে আসি ঘরে।
পায়চারি করে আর সিগারেট পুড়িয়ে এন্তার,
গরম কফির পেয়ালায় ব্যাকুল চুমুক দিয়ে ঘন ঘন
একটি কবিতা শেষ করে সুখে কোনো কোনো দিন
শিরোনাম লিখতে গিয়েই আচমকা ভারি লজ্জাবোধ হয়।