এতকাল ছিলাম একা আর ব্যথিত,
আহত পশুর অনুভবে ছেঁড়াখোঁড়া।
দুর্গন্ধ-ভরা গুহায়িত রাত নিষ্ফল ক্রোধে দীর্ণ,
শীর্ণ হাহাকার ছাড়া গান ছিল না মনে,
জানি প্রাণে ছিল না সতেজ পাতার কানাকানি
-এমনকি মরুভূমির তীব্রতাও ছিল না ধমনিতে,
স্বপ্ন ছিল না,
ছিল না স্বপ্নের মতো হৃদয়।
এই উন্মথিত সময়ের আকাশ চিরে যাব
-এমন সাহসী ডানা ছিল না আমার।
রাত্রিময় আকাঙ্ক্ষাগুলো বেড়ে ওঠেনি সজীব গাছের ছন্দে,
দমকা বাতাসের আনন্দে নেচে ওঠেনি বুকের তারা।
শুধু রূঢ় অনিশ্চয়তার পাথরে
এতকাল ধরে ক্ষয়ে গেছে দিনগুলি, রাতগুলি।
মৃত্যুপ্রতিম স্মৃতির সরীসৃপ নিয়ে
আমি বিব্রত, বিপজ্জনক।
বিশ্বাসের কোনো ঐন্দ্রজালিক তারা
আলো বিলোয়নি সত্তায়, তবু
উদ্ধারের বাসনায় গ’লে প্রার্থনা হয়েছি কতদিন।
অনিদ্রার বিভীষিকায় তুমি এলে
-অনন্তের একবিন্দু আলো-
বাহুতে উজ্জীবনের শিখা,উদ্ধারের মুদ্রা উন্মীলিত।
দমকা বাতাসের আনন্দে কেঁপে উঠল বুকের তারা;
শশকের উৎকণ্ঠা নিয়ে তোমাকে দেখলাম,
রুপালি ঊর্ণাজালের শক্রতা সাধল
দুরন্ত উদ্দাম একরাশ চুল।
কে জানত এই খেয়ালি পতঙ্গ, শীতের ভোর,
হাওয়ায় মর্মরিত গাছ,
ঘাসে-ঢাকা জমি, ছায়া-মাখা শালিক
প্রিয় গানের কলি হয়ে গুঞ্জরিত হবে
ধমনিতে, পেখম মেলবে নানা রঙের মুহূর্ত।
কে জানত লেখার টেবিলে রাখা বাসি রুটি
আর ফলের শুকনো খোসাগুলো
তাকাবে আমার দিকে অপলক
আত্মীয়ের মতো?