এতকাল পরেও কেমন বুক ঢিপ ঢিপ, মুখমণ্ডল জুড়ে
আচমকা রক্তোচ্ছ্বাস। কী যেন আমাকে ভয় দেখায় সারাক্ষণ।
এই যে সকালবেলা কয়েকটি পঙ্ক্তি লিখলাম, সেগুলোর
ওপর এ কিসের ছায়া? শব্দসমুদয় ভয়ার্ত শিশুর মতো মুখ
লুকায় আর দশ আঙুলের ঈষৎ ফাঁক দিয়ে তাকায় দোদুল্যমান
ছায়ার দিকে। খরার দাবদাহ, ঝড়ের ঝাপ্টা বহুরূপী শাসানি
থেকে কোনওমতে বাঁচিয়ে শব্দগুলোকে সস্নেহে জড়ো করেছি
এক জায়গায়। ওরা এখন ভোরবেলার টাটকা রোদ্দুর পান করে।
সুশৃঙ্খল খেলায় মেতেছে। আমার নির্ঘুম রাতের ছটফটানি ওদের
তালাশে দিগ্ধিদিক ছোটার যন্ত্রণা, নাছোড় ব্যাকুলতা দিব্যি ভুলে
গিয়ে নিজেদের মিলিত রূপটানের আনন্দের ঢেউ। সেই অজানা এক
ছায়ার ভাবনা ওদের কাছ থেকে সরে থাকে প্রায়শ;
আমি ছায়াটিকে মুছে ফেলার চেষ্টায় ক্লান্ত। শব্দগুলোর মুখ
থেকে ঘাম মুছিয়ে চুল আঁচড়িয়ে, সাজিয়ে গুজিয়ে ওদের যখন
হাজির করি আমার একান্ত আপনজনের কাছে, তখন প্রিয়তমার
চোখের মুখে মুগ্ধতার কলাপ। নিমেষে আমার অন্তর্লোকে
প্রস্ফুটিত অপরূপ শোভা। সেই মুহূর্তে রক্ত হিম-করে-দেওয়া
ছায়াটির কথা একটুও মনে পড়ে না।