কী যুগে আমরা করি বাস। প্রাণ খুলে কথা বলা
মহাপাপ; যদি চেয়ার টেবিল কিংবা দরজার কানে গলা
খাটো করে বলি কোনো কথা, তবে তারাও হঠাৎ
যেন ব’নে যাবে বড় ঝানু গুপ্তচর। এমনকি গাছপালা,
টিলা, নদীনালা
কারুকে বিশ্বাস নেই বাস্তবিক। আমাদের এমনই বরাত।
কী যুগে করি আমরা বাস। এখন প্রতিটি ঘরে
মিথ্যা দিব্যি পা তুলে রয়েছে ব’সে, প্রহরে প্রহরে
পালটাছে জামা জুতো। সারাক্ষণ খাটছে হুকুম
তারই ক্ষিপ্র ব্যস্ততায় পাড়ার মোড়ল, মজলুম।
মহানুভবতা, প্রীতি ঔদার্য বিবেক সবই নিয়েছে বিদায়
ছেলে-বুড়ো ঘুমোনো পাড়ার থেকে করুণ দ্বিধায়।
কী যুগে আমরা করি বাস। কোনো বসন্তের রাতে
যখন ঘনিষ্ঠ যাই পার্কে দুহুঁ, অসংখ্য হা-ভাতে
ভিড় করে আসে চারপাশে। আমাদের চুমোর ওপর
পড়ে দুর্ভিক্ষের ছায়া। মহামারী দিগ্ধিদিক মাথায় টোপর
প’রে ঘোরে সর্বক্ষণ। আমাদের সন্তানের দোলনা দুলছে মৃদু ছন্দে
অসংখ্য লাশের ঘুম-তাড়ানিয়া উৎকট দুর্গন্ধে।