কী জন্যে এই গ্রীষ্মকাতর অন্ধকারে
মধ্যরাতে জেগে থাকা?
কি জন্যে আজ আকণ্ঠ এক তৃষ্ণা কেবল
বুকের মধ্যে জাগিয়ে রাখা?
মাঝে-মধ্যে বাইরে তাকাই, দূর আকাশে
যায় না দেখা জাগর তারা;
গাছগাছালি নিথর নিঝুম বন্য ঘ্রাণে
পাচ্ছি গতকালের সাড়া।
রাতদুপুরে পড়ছে মনে শীত দুপুরের
একলা শঙ্খচিলের ওড়া,
পড়ছে মনে অনেক আগের সাগর পারের স্বেদ ঝরানো
তেজি তরুণ সফেদ ঘোড়া।
অন্ধকারে মাঠের ভেতর আমরা দু’জন
ছিলাম প্রেমে পুলকিত-
প্রবেশ করে উষ্ণ মাংসে হীরের ছুরি, মদির চাপে
নীল ফোয়ারা উচ্ছুসিত।
রাত্রি আমার চোখে মুখে নিশাস্ ফ্যালে
রমণরত প্রাণীর মতো;
স্মৃতির ঝাঁঝে হঠাৎ আমি হয়ে পড়ি
কেমন যেন অসংযত।
কী জন্যে এই গ্রীষ্মকাতর মধ্যরাতে
আজকে আমি নিদ্রাহারা?
অস্থিরতা পোকার মতো ঘুরছে মনে,
সত্তাজোড়া কিসের তাড়া?
চমকপ্রদ কত কিছুই ঘটে আমার চিত্তপুরে,
নেইকো কোনো লেখাজোখা।
রহস্যময় শব্দবলি জ্বলে নেভে
যেন নিশুত জোনাক পোকা।
আমি কি এই মধ্যরাতে শ্মশানচারী
পদ্য লেখার আকর্ষণে?
ভবিষ্যতের কোন্ দেয়ালি মরীচিকা
দুলিয়ে দিলো দগ্ধ মনে?
কৃষ্ণচূড়া গাছের মতো জ্বলছি একা
চৈতন্যের চৌরাহাতে,
নাম-না জানা তীব্র দহন সইছি কিসের
আবছা মোহন প্রত্যাশাতে?