আপনি এবং আমি, নজরুল ইসলাম, আমরা দু’জন
পাশাপাশি হেঁটে হেঁটে চলেছি কেবলি। আপনার এখন তো
কিছুই কেনার নেই; আপনার ভাণ্ডার সে কবে থেকে পূর্ণ,
আমি আজো শূন্য হাতে ফিরি কখনো দুঃখিত ঘাটে,
কখনো বা আঘাটায়। আপনার কোনো তাড়া নেই প্রকৃতই;
কেবল যে কালো বুনো ঘোড়াটা সে রাতে অতিশয় ম্রিয়মাণ
হাসপাতালের বেডে ফেলেছিল কেমন নিঃশ্বাস বারংবার,
তার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে হয়তো বা, নাকি অন্য দৃশ্য কোনো?
আপনি এবং আমি, নজরুল ইসলাম, আমরা দু’জন
পাশাপাশি হেঁটে হেঁটে চলেছি, মরুভূমি, মরূদ্যান
পেরিয়ে পেরিয়ে বনভূমি এসেছি বিপণী কেন্দ্রে আপাতত।
তাহলে শুনুন কবি, দোহাই পথের, কিছু কথা, যা এখনো
অকথিত, জানতে ইচ্ছে করে খুব-যখন সে কালো ঘোড়া তার
কেশর দুলিয়ে আপনাকে পিঠে নিয়ে ছুটে গেল মেঘলোকে
তখন কি কারো মুখ দেখবার আশায় আপনি আপনার
অমন বিখ্যাত চক্ষুদ্বয় মেলে দিয়েছিলেন ব্যাকুল চতুর্দিকে?
আপনার সাধ কবিতার বাগান বাড়ির মতো অন্তরালে
বড় বেশি ছায়া-ঢাকা রয়ে গেছে, আপনিও আর্ত মহাদ্বীপ!
নজরুল ইসলাম, উদার রাজার মতো চলেছেন হেঁটে
আর আমি আপনার পাশে সংকুচিত সর্বক্ষণ, অথচ কী
ব্যাকুল হাঁটছি একা-একা। কিছুই কেনার নেই আপনার,
অতিশয় নিঃস্ব আমি, আমার রসদ চাই সকাল-সন্ধ্যায়।
আমাকে কিনতে হবে এখনো অনেক কিছু-এই তো দোকানে
সোনালি আপেল আর সুনীল গীটার, মুখচ্ছবি-চিত্রকল্প
টোমাটোর অন্তরালে উপমা এবং আঙুরের অন্তঃপুরে
প্রতীক কিনতে হবে। আপনার কিছুই কেনার নেই আর।