রাতটাই ছিল খুব আলাদা, মদির। বাতাসের
ঢেউয়ে ঢেউয়ে যেন বা বৈষ্ণব পদাবলী কিছু সুর ঢেলে দিয়ে
নিশীথের মধ্যযামে নীরবে যাচাই করে নিচ্ছিল ঈষৎ
প্রভাব আপনকার। মধ্যরাতে কলম উতলা
অকস্মাৎ, উন্মাতাল, থরথর বসে
চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা কাগজের পাশে, স্পর্শ করে উন্মোচিত
স্তন, ঠোঁট, তলপেট, চোখের পল্লব
আর গাঢ় ঘুমের ভেতর কাগজের
নিভৃত সত্তায় জাগে শিহরন। আধো-আধো চোখ মেলা স্মিতা
কুমারী কাগজ শুষে নেয়
শ্রমনিষ্ঠ, বিশদ অভিজ্ঞ লেখনীর সঙ্গমের ঝড়, শেষে
দু’জন দু’দিকে মুখ রেখে শ্বাস ফেলে পাশাপাশি।
কলম খোওয়াবে হেঁটে যায় কোন্ রহস্যপুরীতে। মনে হয়
তার আগে কোথাও দেখেছে যেন এই
মর্মর প্রাসাদ এই হাতির পায়ের মতো থাম,
এই রঙ্মহল, খিলান, তৈলচিত্র, এই উদ্যানের মূর্তি। অকস্মাৎ
লেখনী নিজেকে দেখে মাঠের কিনারে একা দাঁড়িয়ে রয়েছে
প্রত্যাশী চাষীর মতো, আর থৈ থৈ হলুদ ধানের ক্ষেত যেন
চুম্বনের রেখাময় তার প্রিয়তমা দীপ্ত ভরাট কাগজ। পরক্ষণে
ধন্দ লাগে, বুঝি এ ফসল মৃত, পরিণামহীন।
ভোরবেলা কলমের ঘুম ভেঙে গেলে দেখে ভরাট কাগজে
মরা পোকা নয়, দু’টি নবীন নবীনা প্রজাপতি বসে আছে।
২৪.৩.৯৯