রজকের ধরনে নিজেকে নিঙড়ে আমি লিখি কবিতা,
কয়েকটি পঙ্ক্তি লেখার জন্যে
আকাশে উড়ি, পাতালে ডুব দিই,
কত যে রাত্রি আমার কাটে আত্মপীড়নে, অনিদ্রায়।
যে ছেলেটা পাচন হাতে গোরু চরায়
ঘাসবনে, মাঠে, বাঁশি বাজায় গাছের ছায়ায় ব’সে
কিংবা যে মেয়েটি ঢেঁকিতে পাড় দেয়, মাথার ঘাম
পায়ে ঝরায় ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে, যে-তরুণ
অন্তর্গত আলোড়নে স্বদেশকে
একটি বাগানের মতো গড়ে তোলার জন্যে
উপর-অলার পা-চাটা বদরগী আমলা
আর পুলিশের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে,
আমার লেখনী তাদের কথা বলে আর
অবিরাম বলে একজন গৌরীর কথা।
শোনো, আমার লেখনী থেকে মাস্তানের বুলেট বেরোয় না,
কোনো সন্ত্রাসীর ছোরার ফলাও
মুখ খিঁচিয়ে ওঠে না আমার কলম থেকে,
তবু ওরা চায় স্তব্ধ হয়ে যাক আমার লেখনী।
যে আনপড় মহাপুরুষ রুক্ষ মরুভূমিতে
আবে হায়াতের ধারা বইয়ে দিয়েছিলেন একদা,
তিনিই তো উচ্চারণ করেছিলেন, কলমের কালি
শহীদের রক্তের চেয়েও অধিক পবিত্র,
তবে কেন তাঁর ভণ্ড, কূপমণ্ডুক অনুসারীরা
আমার লেখনীর মসীর স্রোত রোধ করতে হন্যে হ’য়ে অসি নাচায়?
২০/১১/৯৫