নিশীথ আমাকে তার থমথমে অন্ধকারে একটি গাছের
নিচে দাঁড় করিয়ে নিগূঢ় কিছু কথা
মৃদু বলে নেয়, অবয়বহীন তাকে ছুঁতে গিয়ে
স্তব্ধতার রোঁয়াগুলো আঙুলে জমাট বেঁধে যায়। সন্ধ্যারাতে
হুইস্কি করিনি পান, তবু কেন মাথার ভেতর
নানা ফুল ফোটে আর নক্ষত্র-নারীরা নেচে ওঠে
দুলিয়ে সোমথ স্তন? কার ইশারায়
ক্ষণে ক্ষণে ঝোপঝাড়ে জ্বলে আর নেভে ক’টি কবিতা-জোনাকি?
আমি কি কখনও কোনও কোকিলকে গলা টিপে, হায়,
মেরেছি বিভ্রমে? তবে কেন সুর তুলতে গেলেই বারবার
সুর কেটে যায়, যেন আনাড়ি সাধক একজন
জবুথবু, ম্রিয়মাণ। আমি তো নিজের কাছ থেকে
ক্রমান্বয়ে সরে গিয়ে বাঁশপাতা, বাতাসের চুমোয় অস্থির
ঘাসের সবুজ ডগা, পাখির বুকের
নিবিড় স্পন্দিত ছন্দ হতে চাই। নিঃসঙ্গতা হয়ে
আমাকে বিরান মাঠে, হু হু দিঘি নিয়ে যায়।
কখনও চাঁদের ঠোঁটে আঙুল ঝুলিয়ে
স্মরণে ফিরিয়ে আনি ভুলে-যাওয়া পদাবলী আর
পায়ের বিবর্ণ এক পাটি জুতো খুঁজতে খুঁজতে
নিশীথে বিহান করে ফেলি। কখন যে
ভোরবেলাকার রোদ অলক্ষ্যে বদলে দেয় মনের প্রচ্ছদ,
বুঝতে পারি না। অকস্মাৎ
সৃষ্টির মোরগঝুঁটি মুঠোয় নিঃশব্দে ভরে নাচে
কবরের কালো ঘাস। আমাকে কবিতাসুদ্ধ গিলে
খাওয়ার উদ্দেশে কীটপতঙ্গের দল ধেয়ে আসে।