অনুষ্ঠানপীড়িত, বয়স্ক একজন কবি ভাবছেন,-হায়,
আমাকে করছে ক্লান্ত ক্রমাগত সংগঠনগুলো।
মঞ্চ থেকে মঞ্চান্তরে চার-পাঁচ ঘণ্টা বসে বসে
প্রতি সন্ধ্যা ভাষণের চাপে আজ ওষ্ঠাগত প্রাণ। কবিতার
রৌদ্রছায়া, রঙধনু আর জ্যোৎস্না থেকে
সরিয়ে আখেরে ঠেলে দেয় অন্ধকার ঊর্ণাজালে।
একটি হাতুড়ি জোরে কবির নিজস্ব সময়কে
ভীষণ গুঁড়িয়ে দিচ্ছে যখন তখন। সমুদ্রের গভীরতা,
আকাশের সুদূর নীলিমা, দিগন্তের মায়ারেখা
অপসৃত চ্যাঁচামেচি আর
মাইক্রোফোনের নিরন্তর বমনে, কোথাও দূরে
তিনি ফের স্বস্তির আশ্রয়ে
গাছের সবুজ পাতা, পাখিদের ওড়াউড়ি, ঘাসে
গুবরে পোকার বিচরণ দেখে, গাঢ় স্তব্ধতার
ভাষা পাঠ করে কিছুকাল
যাপন করার সাধ রোজ আড়মোড়া ভাঙে।
একটি উজ্জ্বল কণ্ঠস্বর তাকে চার বছরের কিছু আগে
প্রীত ছুঁয়েছিল, সেই স্বরের নিকট
খুব অন্তরঙ্গ হয়ে তিনি পৌঁছে যান একদিন,
অথচ এখন তিনি ভিড়ের চিৎকারে
মায়াময় কণ্ঠস্বরটিকে কোথায় যে
হারিয়ে ফেলেন মাঝে মাঝে। আজ কবি হট্ররোল থেকে দূরে
ছায়াচ্ছন্নতায় কাঙ্ক্ষনীয় স্বরের গহনে ডুবে
নব্য চিত্রকল্প আর সুরে জীবনকে মাতিয়ে তুলতে স্বপ্নাতুর।