কবিতা, তোমার সঙ্গে সারাটি জীবন উন্মতাল
কাটিয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখি
আজো; এই গোধূলিতে পা ডুবিয়ে ভাবি-
আমার বিরান ঘাটে কেন
বড় বেশি দেরি করে ভেড়ালে তোমার
অনুপম কারুকাজময় তরী? কেন আরো আগে
দেখিনি তোমার রূপ, কোন্ অপরাধে? লহমায়,
হে কবিতা, আমার দীনতা তুমি দিয়েছে ঘুচিয়ে।
আমাকে পাঠাও তুমি ফুল, পাঠাও দোরেল,
পাতার আড়ালে-থাকা কোকিল, চাতক, মুঠো মুঠো
জোনাকি, সুমিষ্ট ফল, প্রজাপতি আর রঙধনু। কোনোদিন
ফির্নি রেঁধে আনো দ্বিপ্রহরে, কখনো শ্যামল সাঁঝে
চলে আসে কেক নিরিবিলি
তোমার সৌজন্যে। দেখি, মোহন ব্যঞ্জন
সাজাও আমার জন্যে গাঢ় অনুরাগে। ‘অন্নপূর্ণা’
বলে আমি দোল খাই তোমার নিবাসে।
কখনো আমার খর খর যৌবনের উজ্জ্বলতা
পেয়ে যায় তোমার সোনালি পদস্পর্শে,
খোলা চুল ঘরে আনে শ্রাবণের রাত। কালো দু’টি
চোখ অনন্তের ফোঁটা যেন,
নিজের রেশমি চুল নিয়ে খেলা করো
আপন সত্তায় মগ্ন, সরোবর হয়ে ডেকে বলো
‘এসো কবি নিঝুম সাঁতার কাটো উদ্বেলিত জলে’।
ফেরাতে পারি না দৃষ্টি, সরোদের মতো বাজে আমার শরীর।
কবিতা, তোমার সঙ্গে সারাটি জীবন অন্তরঙ্গ
কাটাবার সুখ
পেতে চাই, বড় আশা নিয়ে বসে থাকি
তোমাকে দেখার জন্যে পুনরায় একবার, মুখচুম্বনের
সাধ তীব্র হয় আর নিদ্রাহীন রাতে
তোমার স্তনের তিল কালো নক্ষত্রের মতো জ্বলে
আমার স্মৃতিতে। ভয়ে থাকি সর্বক্ষণ, পাছে তোমার আমার
মাঝখানে বিচ্ছেদের অলঙ্ঘ্য দেয়াল গড়ে ওঠে!
কবিতা, তোমার সঙ্গে সারাটি জীবন বাধাবন্ধহীন আমি
তুমুল কাটিয়ে দিতে চাই।
কখনো নেব না ছুটি, থাকব প্রস্তুত
প্রতিটি প্রহরে, যদি তুমি হাত ধরে নিয়ে যাও হৃদয়ের অন্তঃপুরে।
২৬.৭.৯৪