কথা ছিলো, আমার আনন্দ-গানে ভরিয়ে তুলবো
অলিগলি, জনপথ, অবাধ প্রান্তর,
আমার ভরাট গলা ছোঁবে দিগন্তকে; কথা ছিলো,
পায়রা উড়িয়ে দেবো ভোরবেলা মেঘের কিনারে।
কথা ছিলো, উৎসবের উদ্দেশে কবিতা নিরুদ্বেগ
লিখে মুছে ফেলবো সকল দুঃখ শোক।
কণ্ঠে আনন্দের সুর তোলার সময় বেলাশেষে
বেজে ওঠে ব্যর্থতার করুণ রাগিণী, হাত জুড়ে
কবুতর নয়, কিছু নুড়ি দৃশ্যমান। মনে পড়ে, সেই কবে
কল্যাণের জন্যে এসো বলে শূন্যতায় খেলিয়েছি
কণ্ঠস্বর, অথচ চৌদিকে অকল্যাণ
পেঁচার নিখুঁত সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠার অন্ধকার জপে।
আমার ভেতর থেকে যাবতীয় আমোদ, উল্লাস
কারা যেন অতি দ্রুত ছিনতাই ক’রে নিয়ে যায়।
কথা ছিলো, প্রত্যেককে দেখাবো অনিন্দ্য সূর্যোদয়
মুক্ত মনে, অথচ এখন, এ মুহূর্তে, সূর্যাস্তের ছোপলাগা
কবরের দিকে অসহায় চেয়ে থাকি। অবেলার
কোকিল ছড়িয়ে দেবে সুরের নির্মল কিছু রেনু
কবরের ঘাসে, সেই প্রত্যাশা ফেরারী; বন্দীদশা
এলো বুঝি পুনরায়! নিধন লিপ্সায় মত্ত গুপ্ত ঘাতকেরা
ঘোরে খোলা পথে,
পথিক রবীন্দ্রনাথ কন্ঠে নিয়ে শান্তির ললিত বাণী বিষন্ন, বিব্রত।
২১।১।৯১