কখনো কখনো

কোনো কোনো ভোরবেলা একটি কি দুটি পাখি এসে
বারান্দায় বসে আর তাকায় আমার দিকে, যেন
অতিশয় পরিচিত আমি
ওদের, তাই তো খুব কাছে এসে বসে,
আমার ছিটানো বিস্কুটের গুঁড়ো খেয়ে
পাখা মেলে চলে যায় কত দূরে জানি না কোথায়।

কখনো কোকিল খাঁখাঁ দুপুরের কানে
ব্যাকুল, নিভৃত সুর ঢেলে দেয় বারবার, ভারি
ইচ্ছে হয় ছুটে যাই ঝোপঝাড়ে, টেনে নিই বুকে
পাখিটিকে। সে কি ধরা দেবে? এ কবিকে
পছন্দ হ’লেও ওরে দেবে না তো ধরা। ব্যর্থ আমি
মাঝে মাঝে কল্পনায় শুনি তার গান।

যখন ঘনিয়ে আসে সন্ধ্যা, কাছের গাছের
একটি উৎসুক ডাল বাড়ায় সবুজ গলা তার
আমার নিভৃত ঘরে, যেন
আদর কুড়াতে চায় নিরালায় নিঃসঙ্গ কবির।
ওকে ছুঁতে গেলে আচমকা হাওয়া এসে
এক ঝটকায় ওকে দূরে নিলে শুনি হাহাকার।

নিশীথের প্রথম প্রহরে আকাশের ক’টি তারা
নেমে এসে বসে হেসে প্রসারিত দু’হাতে আমার;
অপরূপ কণ্ঠস্বরে কী যেন বলতে
চেয়ে থেমে যায়, নাচে হাতের তালুতে
প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ পরিচয় স্মৃতিপটে ঝলসিত ব’লে বুঝি।
হঠাৎ হাতের পাতা গাঢ় অমাবস্যা হয়ে যায়!

কোন কোনো গহন রাত্রিরে মনে হয়
কখনো না-দেখা এক জলাশয় ডাকছে আমাকে
মায়াবী জলজ সুরে। জ্যোৎস্না
ওকে বড় বেশি বিচলিত
করছে বুঝি-বা তাই ওর তট ছিঁড়ে
চাইছে আসতে ছুটে এ শহরে আমার নিকট।
২৪-০৪-২০০৩