এফেসীয় ০২

১ অতীতে পাপের দরুন ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধের দরুন তোমাদের আত্মিক জীবন মৃত ছিল।
২ হ্যাঁ, অতীতে ঐসব পাপ নিয়ে তোমরা জীবনযাপন করতে। জগত্ য়েভাবে চলে তোমরা সেভাবেই চলতে। তোমরা আকাশের মন্দ শক্তির অধিপতির অনুসরণকারী ছিলে। সেই একই আত্মা এখনও যাঁরা ঈশ্বরের অবাধ্য তাদের মধ্যে ক্রিয়াশীল।
৩ অতীতে আমরা সকলে ঐ লোকদের মত চলতাম। আমাদের কুপ্রকৃতির লালসাকে চরিতার্থ করতে চেষ্টা করতাম। আমরা আমাদের দেহ ও মনের অভিলাষ অনুযাযী চলতাম। আমাদের য়ে অবস্থা ছিল তার দরুন ঐশ্বরিক ক্রোধ আমাদের ওপর নেমে আসতে পারত, কারণ আমরা অন্য আর পাঁচজনের মতোই ছিলাম।
৪ কিন্তু ঈশ্বরের করুণা অসীম। তিনি তাঁর মহান ভালবাসায় আমাদের কতো ভালবাসেন।
৫ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে য়েসব অন্যায় কাজ করেছিলাম তার ফলেই আমরা আত্মিকভাবে মৃত ছিলাম; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্ট যীশুর সাথে আমাদের নতুন জীবন দিলেন। তোমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহেই উদ্ধার পেয়েছ।
৬ ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে আমাদের জীবিত করে স্বর্গীয়স্থানে তাঁর পাশে বসতে আসন দিয়েছেন।
৭ ঈশ্বর এই কাজ করলেন য়েন আগামী যুগপর্য়ায়ে তাঁর অতুলনীয় মহানুগ্রহ সকলের প্রতি দেখাতে পারেন। খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এই অনুগ্রহ তিনি প্রকাশ করেছেন।
৮ কারণ ঈশ্বরের অনুগ্রহের দ্বারা বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তোমরা উদ্ধার পেয়েছ। বিশ্বাস করাতেই তোমরা সেই অনুগ্রহ পেয়েছ। তোমরা নিজেরা নিজেদের উদ্ধার কর নি; কিন্তু তা ঈশ্বরের দানরূপে পেয়েছ।
৯ তোমাদের নিজেদের কর্মের ফল হিসেবে তোমরা উদ্ধার পাও নি, তাই কেউই গর্ব করে বলতে পারে না য়ে সে তার নিজের দ্বারা উদ্ধার পেয়েছে।
১০ কারণ ঈশ্বরই আমাদের নির্মাণ করেছেন। খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বর আমাদের নতুন সৃষ্টি করেছেন য়েন আমরা সর্বপ্রকার সত্ কাজ করি। এইসব সত্ কর্ম ঈশ্বর পূর্বেই আমাদের জন্য তৈরী করে রেখেছিলেন যাতে আমরা সেই সত্ কাজ করে জীবন কাটাতে পারি।
১১ তোমরা অইহুদী, পরজাতিরূপে জন্মেছিলে। তোমরাই সেই লোক যাদের সুন্নত ইহুদীরা বলে ‘অসুন্নত’। তাদের সুন্নত হওয়া কেবল এক প্রক্রিয়া, যা দেহের ওপর মানুষের হাত দ্বারা করা হয়।
১২ মনে রেখো অতীতে সেই সময় তোমরা খ্রীষ্ট থেকে দূরে ছিলে। তোমরা ইস্রায়েলের নাগরিক ছিলে না। ঈশ্বর তাঁর প্রজাদের সঙ্গে য়ে চুক্তিগুলি করেছিলেন, তোমরা সেইসব প্রতিশ্রুতিযুক্ত চুক্তিগুলির বাইরে ছিলে। তোমাদের প্রত্যাশা ছিল না আর তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না।
১৩ এক সময় তোমরা ঈশ্বর থেকে বহুদূরে ছিলে; কিন্তু এখন খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা নিকটবর্তী হয়েছ।
১৪ খ্রীষ্টই আমাদের শান্তির উত্‌স। ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে য়ে শত্রুভাব প্রাচীরের মত ব্যবধান সৃষ্টি করেছিল, খ্রীষ্ট নিজ দেহ উত্‌সর্গ করে ঘৃণা ও ব্যবধানের সেই প্রাচীর ভেঙ্গে দিয়েছেন।
১৫ ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থায় অনেক আদেশ নিয়মকানুন ছিল; কিন্তু খ্রীষ্ট সেই বিধি-ব্যবস্থা লোপ করেছেন। খ্রীষ্টের উদ্দেশ্য ছিল ঐ দুই দলের মধ্যে শান্তি স্থাপন করা এবং নিজের মধ্যে দিয়ে ঐ দুই দল থেকে এক নতুন মানুষ সৃষ্টি করা,
১৬ এবং ক্রুশের ওপর তাঁর মৃত্যুর মাধ্যমে দুই জনগোষ্ঠীকে ঈশ্বরের সাথে একই দেহে পুনর্মিলিত করা। এর ফলে দুই দলের মধ্যে য়ে শত্রুভাব ছিল, তার অবসান ঘটল।
১৭ তাই খ্রীষ্টে এসে তোমরা যাঁরা ঈশ্বর থেকে দূরে ছিলে, তোমাদের কাছে শান্তির বাণী প্রচার করলেন; আর যাঁরা ঈশ্বরের কাছের লোক তাদের কাছে শান্তি নিয়ে এলেন।
১৮ হ্যাঁ, খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা সকলে একই আত্মার দ্বারা পিতার কাছে আসতে পারি।
১৯ তাই, হে অইহুদীরা, এখন তোমরা আর আগন্তুক বা বিদেশী নও। এখন ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সঙ্গে তোমরাও নাগরিক। তোমরা ঈশ্বরের পরিবারের সদস্য।
২০ প্রেরিতরা ও ভাববাদীরা য়ে ভিত গেঁথেছিলেন তার ওপর তোমাদের গেঁথে তোলা হচ্ছে। খ্রীষ্ট স্বয়ং হচ্ছেন সেই দালানের গাঁথনীর প্রধান পাথর,
২১ যা গোটা দালানটিকে ধরে রেখেছে। খ্রীষ্ট এই দালানটি গড়ে তোলেন য়েন তা প্রভুতে এক পবিত্র মন্দিরে পরিণত হতে পারে।
২২ খ্রীষ্টে তোমাদের অন্য মানুষদের সঙ্গে একই সাথে গেঁথে তোলা হচ্ছে। তোমাদের এমন এক স্থান হিসেবে গঠন করা হয়েছে য়েখানে ঈশ্বর আত্মার মাধ্যমে বাস করেন।