যদি বলি, কী সুন্দর তুমি,
তবে কি
বিব্রত হবে খুব?
কোমল নত হবে তোমার
মাথা?
তুমিতো নিজেই জানো,
সৌন্দর্য তোমাকে সর্বদা
জড়িয়ে রাখে আদরে।
যখন তুমি অতি সাধারণ
কথাও বলো, নিমেষে
তুচ্ছতা স্পর্শ করে সুনীল
উচ্চতাকে। যখন তাকাও
গাছের পাতা,
সপ্তর্ষিমন্ডল অথবা আমার
দিকে, সৌন্দর্য ঝরে সবখানে।
তোমার
উচ্চারিত প্রতিটি শব্দের
আড়ালে গড়ে ওঠে মধুচক্র।
তোমার বাচনভঙ্গি। কী উপমা
খুঁজব তার?
যেন ঝর্নাধারা বয়ে যায় সবুজ
উপত্যকায়,
কণিকার গায়কি হয়ে ওঠে
তোমার স্নিগ্ধ বাক্যের প্রতিটি
পর্ব আর যতি।
এই মুহূর্তে তুমি আমার কাছে
বসে নেই, কত দূরে তুমি।
তবু তোমাকে দেখছি আমি,
হাঁটছো সুরুচির
বাতাবরণে; তুমি মুদ্রিত
আমার ভেতর। মৃত্যু ছাড়া
কার এমন সাধ্য মুছে ফেলে
সেই অপরূপ প্রতিকৃতি?
আমি ঠিক দেখতে পাচ্ছি,
তুমি
বসে আছ একা, গুছিয়ে নিচ্ছ
শাড়ির আঁচল,
এই তো তোমার মাথা ঈষৎ
হেলে গেছে
পেছনে, জুড়োলো ভোরবেলার
কফি।
আগে কি জানতাম কী
মনোমুগ্ধকর হতে পারে
একটি বিভ্রাট?
যার কোনো অস্তিত্ব ছিল না
এক মুহূর্ত আগেও,
তা হয়ে ওঠে চিরদিনের
অবলম্বন? কবিতার খাতা
মেলে ধরে
দেখছি প্রত্যাশার চূড়ায়
মোহন আলোর লুটোপুটি।
কী আশ্চর্য, একটি সামান্য
ভুলের দাক্ষিণ্যে
পেয়ে গেলাম তোমাকে,
যেমন কোনো নিঃস্ব ভবঘুরে
দৈবক্রমে
পেয়ে যায় অসামান্য ঐশ্বর্য।
সত্যি, পেলাম কি?
এই মুহূর্তে তোমার কাছে
পাঠিয়ে দিতে চাই
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর
বুলবুল,
দোয়েল আর শ্যামা। আমার
কণ্ঠস্বরকে
কোকিলের কুহুতান করে
পাঠাতে চাই তোমার উদ্দেশে,
সে-সুর রক্ত ঝরিয়ে তোমার
নাম ধরে ডাকবে অষ্টপ্রহর,
যা তুমি ছাড়া বুঝতে পারবে
না অন্য কেউ।
দেবদূতদের নির্দেশ দেবো
তোমার চারদিকে
হিরন্ময় তরবারি হাতে পাহারা
দিতে,
যাতে শয়তানের দল উত্ত্যক্ত
করতে না পারে তোমাকে,
যাতে অমঙ্গলের ছায়া ঘেঁষতে
না পারে তোমার ত্রিসীমানায়।
আর আমার ছন্নছাড়া
কবিতাগুলোকে পাঠাব
তোমার নিঃসঙ্গতায়। এখন
থেকে আমার কবিতা তোমার
হাত
স্পর্শ করবে, হাত ঢুকিয়ে
দেবে ব্রা-র ভেতর, পালতোলা
খর আবেগে
মুখ চুম্বন করবে তোমার,
বারণ করলেও শুনবে না।
২৩.৫.৯৪