একটি পুরানো ঘরে আমি বাস করি। ঘরটির
চার দেয়ালের রঙ ফিকে
হয়ে গেছে। রাত শুরু হতেই কেমন
বেয়াড়া শব্দের ধাক্কা তন্দ্রা ছিঁড়ে ফেলে। চোখ মেলে
দেখি দু’টি ইঁদুর দেয়াল ঘেঁষে বুক-শেল্ফের
ভেতরে প্রবেশ ক’রে নিমেষে উধাও।
কী করি, কী করি, ভেবে নিষ্ক্রিয় কাটিয়ে দিই কিছু
সময় এবং পুনরায় তিনটি ইঁদুর ছুটে
চলে যায় অন্য দিকে না জানি কীসের খোঁজে আর
হতবাক আমি শূন্যতার স্তব করি চোখ মুদে।
অকস্মাৎ মনে পড়ে গেলো সেই নারী
সৌন্দর্যের আভা নিয়ে এসেছিলো দেহমনে, অথচ চকিতে
চলে গেলো কী নিষ্ঠুর কর্কট ব্যাধির
নিপীড়নে ক্লান্ত হয়ে চির-নিশীথেরঅন্ধকারে। বর্তমানে
তার প্রিয়জন যারা রয়ে গেলো অনেকেই, হায়, তারা নিত্য
মাথা কুটে মরলেও সে আর কখনো
আসবে না শুধু কিছু স্মৃতি-
কথা তার কালেভদ্রে হবে জাগরিত।
যতদূর মনে পড়ে, যৌবনের ঊষালগ্নে সে নিত্য চেয়েছে
প্রবল নাড়িয়ে দিতে স্তবির, নিষ্ফল
বুনিয়াদ নতুন সৃষ্টির প্রেরণায়। এই তো সে
এখনো রয়েছে আমাদের মহফিলে সুচেতনা
কথায় ছড়িয়ে দিতে। বিমুগ্ধ সবাই
তাকিয়ে রয়েছে সৌন্দর্যের আভাময় তার দিকে।
ইতিমধ্যে ঢের ধুলো পড়েছে ছিটিয়ে-থাকাকিছু
স্মৃতিতে এবং নিদ্রাহীন এই কালো রাতে ক্ষণে
ক্ষণে ঢের ঢ্যাঙা, হিংস্র ইঁদুর লাফিয়ে
পড়ছে আমার চোখ, মুখ, বুক ছিঁড়ে খাবে ব’লো! চতুর্দিক
প্রবল কাঁপিয়ে আমি চেঁচিয়ে উঠতে চাই, অথচ বোবার
মতো অসহায় পড়ে থাকি; অতি দ্রুত খসে পড়ছে শরীর!
২-১১-০৩