‘সাতসকালে নাশ্তা নাকে মুখে গুঁজে
তুই কই ছুটলিরে খোকা? একটু সবুর কর,
আরেকটি রুটি খেয়ে নে।‘
‘মা, আমার বড় তাড়া আছে আজ’, বলল সেই সতেজ তরুণ।
আলনা থেকে পাঞ্জাবি নামিয়ে পরার সময়
ওর অনূঢ়া বড় আপা বললেন, ‘দাঁড়া, তোর
পাঞ্জাবির ছেঁড়া জায়গাটা একটু মেরামত ক’রে দিই।‘
‘অপেক্ষা করার মতো সময় আমার নেই আপা’, ব’লে সে
ছেঁড়া জামা গায়ে চাপাতে চাপাতে
বারান্দার দিকে এগিয়ে গেল।
বারান্দায় ওর বাবা, বর্ষীয়ান উপার্জন-অক্ষম এক প্রাক্তন রাজনীতিক,
চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে
মাঝে-মাঝে দেখে নিচ্ছিলেন নাগরিক আকাশ।
ছেলেকে প্রায় দৌড়ুতে দেখে নিজের পক্ষে বেমানান
এক বাক্য উচ্চারণ করলেন, ‘তোর কি এই
মিটিং-মিছিলে নিজেকে না জড়ালেই নয়?’
ধাবমান তরুণ ওর বাবার দিকে তাকিয়ে
হাসি-উদ্ভাসিত মুখে দরজা পেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়ায়।
সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে প্রায় সন্ধেবেলা,
মা ভাবছেন, খোকা কেন আসছে না? একটা অশুভ চিন্তা
ওকে দখল ক’রে ফেলছে ক্রমাগত। তরুণের
বড় আপা মনে-মনে বলছে, কী জেদী ছেলেরে বাবা,
কোনো বাধাই মানতে চায় না। আর বয়েসী পিতা, ঈষৎ ত্রস্ত
আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখছেন তাঁর ভবিষ্যৎ অস্তগোধূলিতে মিলিয়ে যাচ্ছে।
২০/২/৯৫