এখন বয়স তাঁর পুরোপুরি পঁচাশি বছর;
ধবধবে শাদা চুল আর দাড়ি, প্রায় টলস্টয়
মনে হয় কখনও কখনও। একা ঘরে বসে মৃতা
পত্নীর রঙিন প্রতিকৃতি, তাঁরই আঁকা, দেখেছেন
সানুরাগ দৃষ্টিতে; পড়ছে মনে অতীতের কিছু
খুচরো ঘটনাবলী স্কেচের ধরনে। দিনান্তের
অস্তরাগ, সর্ষেক্ষেত, বৃষ্টিধারা, তারার কারাভাঁ
গন্তব্যের কুয়াশাজড়ানো পথ কী-যে বলে তাঁকে,
কিছু তার স্পষ্টত বোঝেন আর কিছুটা বোধের
বাইরেই থেকে যায়। এখন আঁকেন মাঝে মাঝে
কোনও ছবি অন্তর্গত সৃজনের হাতছানি তাঁকে
বড়ই ব্যাকুল করে বলে। কানে আসে কারও ডাক,
কে ডাকল এমন গহন রাতে? অচেনা ধূসর
কণ্ঠস্বর; কাউকে না জাগিয়ে দরজা খুলে একা
দাঁড়ান নিঝুম অন্ধকার বারান্দায়। আসমানে
সুবিপুল রহস্যের দীর্ঘশ্বাস, সপ্তর্ষিমণ্ডল
নীরবে পাহারা দেয়। অতীতের ঊর্ণাজাল তাঁকে
চকিতে জড়িয়ে ধরে পুনরায়। তাঁর চোখ মুখ
কেমন আচ্ছন্ন হয় সম্মোহনী সুরে, ক্ষণিকের
জন্যে; চোখে শিশিরের ফোঁটা নিয়ে আগামীর দিকে
সতৃষ্ণ তাকান তিনি, শিল্পী কাজী আবুল কাসেম।