এই মুহূর্তে তুমি আসতে পারো এখনে। তোমার
পদস্পর্শে ঘাসগুলো হেসে উঠবে, লোকটার
স্বপ্ন সমুদয় আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসবে, তোমাকে
সংবর্ধনা জানাবে দোয়েল আর অজস্র
প্রজাপতি। কোনো দ্বিধা কোরো না তুমি,
তোমাকে আলিঙ্গন করবে
লোকটার আকাঙ্ক্ষার সকল গোলাপ, তোমার
পায়ে চুমু খাবে শারদ রাতের ঝর্নাধারা।
তুমি এসেই দ্যাখো একবার, তোমার কাঁধে
এসে বসবে পৃথিবীর সুন্দরতম পাখি,
প্রাণমাতানো সুর ঝরাবে তোমার সারা শরীরে।
একটি হরিণ ওর কোমল পদ্ধতিতে
তোমার আঁচল ধরে টেনে এনে তোমাকে
আসন পেতে দেবে পদ্মদীঘির কিনারে। তোমার
পায়ের রাঙা পাতা ধুইয়ে দেবে রূপোলি তন্বী মাছ।
তোমার সত্তায় জাগবে অপূর্ব শিহরণ এবং
তুমি কবিতার অপরূপ উন্মীলন দেখে চকিতে
বুঝতে পারবে, তোমাকে ঘিরেই সকল আয়োজন।
এই যে লোকটা দাঁড়ানো এখানে
সেই কবে থেকে, তাকে স্বর্ণচাঁপা, বন পায়রা, ক্যামেলিয়া,
শেষ রাতের তারা, জ্যোৎস্না-ঝলসিত নদীর ধারা অনেক আগেই
শনাক্ত করেছে কবি বলে। এই লোকটাই
তোমার প্রকৃত প্রেমিক, যে জানে আমাকে
তার সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয় কিছুতেই।
লোকটা, যে কবি, তার মুহূর্তগুলো নক্ষত্রের মতো
ছিটিয়ে দেবে তোমার চারপাশে,
তুমি সেই রূপোলি টুকরোগুলো ধারণ করো
তোমার চোখের পাতায়, অধরে, স্তনচূড়ায়, নাভিমূলে।
আকাশের তারার মিছিল যখন অপসৃত দৃষ্টি থেকে,
যখন জোনাকিরা সব আলো বিলিয়ে ফতুর হয়ে
মৃত পড়ে থাকবে ভেজা ঘাসে, তখন তুমি ইচ্ছে হলে চলে যেও।
সেই লাজনম্র প্রস্থানে কবিতা, উর্মি, শতাব্দী তোমাকে
অনুসরণ করবে ছায়া হয়ে এবং তখন
লোকটাকে ঘিরে স্বপ্নের ঝাঁক ঝাঁক গোলাপি মৌমাছির গুঞ্জরণ।
২৩.৯.৯৪