ঋতুবদলের সামান্য পদ্য

জীবনের অনেকটা পথ পেরুলেও মানে তার
পুরোপুরি কখনো যায় কি বোঝা? এই
আমি দুনিয়ার এক কোণে
কাটিয়ে দিয়েছি চুয়াত্তর বছরের দিনরাত,
তবু মনে হয়, বাস্তবিক
ছিলাম যেন-বা অতিশয় আবছায়া কুয়াশায়।

বস্তুত ভাবলে দেখা যাবে মেঘনা নদীর তীরে
ঝিমোনো পাড়া গাঁ পাড়াতলীতেই
আমার প্রবীণ পূর্বপুরুষেরা আর আমার জনক
হয়েছেন ভূমিষ্ঠ এবং মানুষের মঙ্গলার্থে
রেখেছেন দীর্ঘস্থায়ী কিছু নিদর্শন। সেখানেই
বাল্যকালে প্রথম দেখেছি সর্ষেক্ষেতে আনন্দিত
প্রজাপতিদের ওড়াউড়ি আর কাজলা দিঘিতে
কিশোর কিশোরীদের প্রফুল্ল সাঁতার বহুদিন।
বস্তুত প্রত্যেক ঋতু কী সুন্দর নগ্নতায় ফুটে
ওঠে পাড়াগাঁয়ে, গ্রামবাসী অনেকেই
অথচ মানুষ
দারিদ্র্যের প্রহারে কাতর খুব প্রায়শই, শহরের
বস্তিও নিয়ত বড় দুমড়ে মুচড়ে যায় অভাবের কালো
দংশনে এবং কতিপয় নারী বাঁচার তাগিদে বেপরোয়া
দেহের বেশাতি করে। আস্তাবল ক্রমশ উজাড় হয় আর
গাঁয়ের গোয়ালে হন্তারক মৃত্যু ঢুকে পড়ে দ্রুত। তবু নীল
আসমানে পূর্ণিমার চাঁদ হাসে, নদীবক্ষে মাছ
প্রফুল্ল সাঁতার কাটে, কবিকুল লেখে ঋতুবদলের পদ্য।
৩০-১০-০৩