ঋগ্বেদ ১০।১৭৭
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১৭৭
মায়া দেবতা। পতঙ্গ ঋষি।
১। বিদ্বানগণ মনে মনে আলোচনাপূর্বক মানস চক্ষে একটা পতঙ্গের দর্শন পান, দেখেন যে অসুরের মায়া উহাকে আক্রমণ করিয়াছে। পণ্ডিতগণ কহেন যে, উহা সমুদ্রের মধ্যে ঘটিতেছে। তাহারা বিধাতার কিরণসমূহের ধামে যাইতে ইচ্ছা করেন(১)।
২। পতঙ্গ মনে মনে বাক্যকে ধারণ করেন; গর্ভের মধ্যে গন্ধর্ব তাহাকে সেই বাক্য শিখাইয়াছে; সেই বাণী দিব্যরূপিণী, স্বর্গসুখের প্রদানকর্তী, বুদ্ধির অধীশ্বরী। বিদ্বানগণ সেই বাণীকে সত্যের পথে রক্ষা করেন(২)।
৩। দেখিলাম, এক গোপাল তাহার কখন পতন নাই, কখন নিকটে, কখন দূরে, নানা পথে ভ্রমণ করিতেছে। সে কখন অনেক বস্ত্র একত্রে পরিধান করিতেছে, কখন পৃথক পৃথক পরিধান করতেছে। এইরূপে সে বিশ্বসংসার মধ্যে পুনঃ পুনঃ গতায়াত করিতেছে(৩)।
————
(১) জীবাত্মা মায়াতে আচ্ছন্ন, ইহা চিন্তা দ্বারা জানা যায়; সমুদ্রবৎ পরব্রহ্মের মধ্যেই এই জীবাত্মা বিদ্যমান আছেন; পরমাত্মার ধাম আলোকময়, তথায় গেলেই মায়া হইতে মুক্তি। সায়ণ।
(২) অর্থ, জীবাত্মার মনে বীজরূপে সকল শব্দ বিদ্যমান থাকে, গন্ধর্ব, অর্থাৎ দেবতা তাঁহার মনে গর্ভাবস্থায় সেই বীজ আধান করিয়া রাখেন। বাক্যের শক্তি অসীম, বুদ্ধিমানগণ বাক্যকে কখন মিথ্যার দিকে লইয়া যান না। সায়ণ।
(৩) অর্থ, জীবাত্মার ধ্বংস নাই, নানা যোনি ভ্রমণ করেন; কোন জন্মে নানা গুণ ধরেন, কোন জন্মে দুটি একটী গুণ ধরেন। নিকৃষ্ট যোনিতে অল্পই গুণ থাকে, উৎকৃষ্ট যোনিতে অনেক গুণ প্রদর্শন করা হয়। সায়ণ। বলা বাহুল্য যে এই জীবাত্মা সম্বন্ধে সূক্তটি আধুনিক ।