ঋগ্বেদ ১০।১৫৯

ঋগ্বেদ ১০।১৫৯
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১৫৯
শচী দেবতা। শচীই ঋষি(১)।

১। এই যে সুৰ্য উদয় হইয়াছেন, ইহা আমার সৌভাগ্যই উদয় হইয়াছে। আমি ইহা বুঝিয়াছি, সকল সপত্নী আমার নিকট পরাস্ত, আমি স্বামীকেও বশ করিয়াছি।

২। আমিই কেতু, আমিই মস্তক; আমি প্রবল হইয়া স্বামীর নিকট মিষ্ট বাক্য লাভ করি। আমাকে সর্বোপরিবর্তিনী জানিয়া আমার স্বামী আমার কাৰ্য্যেই অনুমোদন করেন, আমার মতেই চলেন।

৩। আমার পুত্রগণ শত্রুনিধনকারী, অর্থাৎ বলবান; আমার কথাই সর্বশ্রেষ্ঠ শোভায় শোভিত। আমি সকলকে জয় করি। আমারই নাম স্বামীর নিকট আদরণীয় হয়।

৪। যে যজ্ঞ করিয়া ইন্দ্র বলবান ও শ্রেষ্ঠ হইয়াছেন, হে দেবগণ! আমি তাহাই করিয়াছি; তাহাতে আমার সকল শত্রু নষ্ট হইয়াছে।

৫। আমার শত্রু জীবিত থাকে না, শত্ৰুদিগকে আমি বধ করি, জয় করি, পরাস্ত করি। যেমন অস্থিরবুদ্ধি লোকের সম্পত্তি অন্যে হরণ করে, তদ্রূপ আমি অপর নারীগণের তেজঃ খণ্ডন করিয়া দিয়াছি।

৬। আমি এই সকল সপত্নীদিগকে জয় করিয়াছি, পরাস্ত করিয়াছি। সে কারণে আমি এই বীরের উপর প্রভুত্ব করি, পরিবারবর্গের উপরও প্রভুত্ব করি।

————

(১) এটাও সপত্নীর উপর প্রভুত্ব লাভ করিবার মন্ত্র মাত্র। এটা যে অপেক্ষাকৃত আধুনিক, বলা বাহুল্য। শচীকে এই সূক্তের দেবতা ও ঋষি বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে কিন্তু এটা যে ইন্দ্রাণীর উক্তি, সূক্তের মধ্যে তার কোনও নিদর্শন নাই। ফলতঃ প্রথম নয় মন্ডলে যে ঋষিদিগের নাম দেয়া হইয়াছে, তাহার অর্থ আছে, সূক্তগুলি প্রায় সেই সেই ঋষি বা তদ্বংশীয়দিগের দ্বারা রচিত। দশম মণ্ডলের অনেকগুলি সূক্ত অপেক্ষাকৃত আধুনিক, এবং পাছে লোকে সেগুলিকে অশ্রদ্ধা না করে, সেই জন্য ঋষির স্থলে দেবতাদিগের নাম বসাইয়া দেওয়া হইয়াছে।