ঋগ্বেদ ১০।১০৫
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১০৫
ইন্দ্র দেবতা। সুমিত্র অথবা দুর্মিত্র ঋষি।
১। হে ইন্দ্র! তুবি স্তব বাঞ্ছা কর, স্তব দিয়াছি; বৃষ্টির জন্য প্রচুর সোম প্রস্তুত করিয়াছি; কবে আমাদিগের ক্ষেত্রের জলপ্রণালী বারিপূর্ণ হইবে?
২। তাহার দু পুরুষ ঘোটক সুশিক্ষিত, অনেক কাৰ্য্য করে, দুটাই উজ্জ্বল ও কেশযুক্ত। তাহাদিগের পতি অর্থাৎ ইন্দ্র দান করিবার জন্য আগমন করুন।
৩। বলবান ইন্দ্র যখন শোভার জন্য ঘোটক যোজনা করিলেন, তখন পাপের ফল সকল অপগত হইল, তখন মনুষ্যের পরিশ্রম ও ভয় আর রহিল না, অর্থাৎ মনুষয সুখী হইল।
৪। ইন্দ্র মনুষগ্যের নিকট পূজা প্রাপ্ত হইয়া ধন সমস্ত একত্র আকর্ষণ করিয়া দিলেন। তিনি নানা কার্যকারী শব্দায়মান দুই ঘোটক চালাইতে লাগিলেন।
৫। তিনি কেশবিশিষ্ট প্রকাণ্ড দুই ঘোটকে আরোহণপূর্বক আপনার দেহ পুষ্টির জন্য আপনার সুগঠন দুই হনু চালনাপূর্বক আহার প্রার্থনা করেন।
৬। ইন্দ্রের ক্ষমতা অতি সুন্দর; তিনি সুশ্রী, মরুৎদেবতাদিগের সহিত যজমানকে সাধুবাদ করিলেন। তিনি মাতরিশ্বাতে থাকেন, যেরূপ ঋভুগণ ক্রিয়াকৌশলে রথ ইত্যাদি নির্মাণ করিয়াছিলেন, তদ্রুপ বীর ইন্দ্র নিজ বলে নানা বীরের কার্য সম্পাদন করিলেন।
৭। তিনি দস্যুকে বধ করিবার জন্য বজ্র প্রস্তুত করিয়াছেন; তাহার শ্মস্রু হরিৎবর্ণ; তাহার ঘোটকও হরিতবর্ণ; তাহার হনুদেশ সুশ্রী; তিনি আকাশের ন্যায় বিশাল।
৮। আমাদিগের পাপ সমস্ত লঘু কর; আমরা যেন ঋকের প্রভাবে ঋকশূন্য ব্যক্তিদিগকে বধ করিতে পারি। যে যজ্ঞে স্তবের সম্পর্ক নাই, তাহা কখন স্তবযুক্ত যজ্ঞের ন্যায় তোমার প্রীতিকর হয় না (১)।
৯। যজ্ঞগৃহে যজ্ঞভারবহনকারী ঋত্বিকগণ যখন ক্রিয়া আরম্ভ করিলেন, তখন তুমি যজমানের সঙ্গে এক নৌকায় আরোহণ করিয়া আপনার কীর্তি প্রতিষ্ঠা কর, অর্থাৎ যজমানকে তারণ কর।
১০। যে গাভী দুগ্ধ বর্ষণ করে, সে তোমার শুভের জন্য হউক, যে পাত্র দ্বারা তুমি নিজ পাত্রে মধু তুলিয়া লও, সেই দৰ্ব্বী (হাতা) যেন নিৰ্ম্মল ও কল্যাণকর হয়।
১১। হে বলশালী! তোমার উদ্দেশে সুমিত্র এই প্রকার শত স্তব উচ্চারণ করিলেন; দুর্মিত্ৰ এইরূপ স্তব করিলেন; যেহেতু তুমি দস্যুহত্যা ব্যাপারে কুৎসের পুত্রকে রক্ষা করিয়াছ। (কুৎসের পুত্রই সুমিত্র এবং এই সূক্তের ঋষি)।
————
(১) ঋকশূন্য লোকের উল্লেখ। তাহাদিগের ধর্মানুষ্ঠান স্তবশূন্য।