ঋগ্বেদ ১০।০২৬
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ২৬
পূষা দেবতা। বিমদ ঋষি।
১। উত্তম উত্তম স্তব প্রস্তুত করা হইয়াছে, সেই সকল স্তব পূষা দেবের প্রতি প্রয়োগ করা হইতেছে। অতএব, সেই মহীয়ান সৰ্ব্বদা রথ যোজনা পূৰ্ব্বক আসিয়া দুই জনকে, অর্থাৎ যজমান ও তাহার বনিতাকে রক্ষা করুন।
২। এই মেধাবী যজমানব্যক্তি, পূষাদেবের মণ্ডল মধ্যে যে প্রচুর জলের ভাণ্ডার আছে, তাহা যজ্ঞের দ্বারা পৃথিবীতে আনয়ন করেন; সেই পূষাদেব যেন ইহার স্তবের প্রতি কর্ণপাত করেন (১)।
৩। সেই পূষাদেব সোমের তুল্য রসসেচনকারী; তিনি উত্তম স্তবের প্রতি কর্ণপাত করেন, সেই সুশ্রী পূষাদেব বারি সেক করেন, আমাদিগের গোষ্ঠ মধ্যে বারি সেচন করেন।
৪। হে পূষাদেব! আমরা তোমাকে মনে মনে ধ্যান করতেছি, তুমি আমাদিগের স্তবের স্ফূর্তি করিয়া দাও, তোমার সেবার জণ্ঠ পুরোহিতগণ ব্যস্তসমস্ত হয়।
৫। সেই পূষাদেব যজ্ঞের অর্ধাংশের ভাগী, তিনি রথে অশ্বযোজনাপূর্বক গমন করেন, তিনি মনুষ্যদিগের হিতকারী ঋষিবশেষ; তিনি বুদ্ধিমান ব্যক্তির বন্ধুস্বরূপ, তাহার শত্ৰুদিগকে দূর করিয়া দেন ।
৬। গর্ভাধান গ্রহণ করিবার যোগ্যা সুন্দরমূর্ভিধারিণী ছাগী এবং যে ছাগল, পূষাদেব সে সকল পশুর প্রভু। তিনিই মেষলোমের বন্ধু বয়ন করেন, তিনিই বস্ত্র ধৌত করিয়া দেন (২)।
৭। প্রভু পূষা অন্নের অধিপতি, প্রভু পূষা সকলের পুষ্টিকর। সেই সৌম্যমূর্তি দুর্ধর্ষ পূষা ক্রীড়াস্থলে আপনার শ্মশ্রু সমস্ত কম্পিত করিতে লাগিলেন।
৮। হে পূষা! ছাগলেরা তোমার রথের ধুরা বহন করিতে লাগিল, তুমি বহুকাল পূৰ্ব্বে জন্মিয়াছ, কখন আপন অধিকার হইতে ভ্রষ্ট হও নাই, সকল যাচকের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ কর।
৯। সেই মহীয়ান্ পূষাদেব নিজ বলের দ্বারা আমাদিগের রথ রক্ষা করুন। তিনি অন্নের বৃদ্ধি সম্পাদন করুন, তিনি আমাদিগের এই নিমন্ত্রণের প্রতি কর্ণপাত করুন।
————
(১) পূষা সূর্য্য একই, সূর্য্য হইতে বৃষ্টি, এই নিমিত্ত তাহার মন্ডল মধ্যে জলভান্ডার।
(২) ছাগই পূষার বাহন, তাহা পূর্বে বলা হইয়াছে। এই স্থানে মেষলোমের বস্ত্র বয়ন ও ধৌত করণের উল্লেখ পাওয়া যায়।