ঋগ্বেদ ১০।০২১
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ২১
ঋষি ও দেবতা পূর্ববৎ।
১। হে অগ্নি! তুমি দেবতাদিগের আহ্বানকর্তা; স্বরচিত এই সমস্ত স্তবের দ্বারা তোমাকে সম্বোধন করিতেছি। যজ্ঞের কুশবিস্তার করা হইয়াছে। তোমার যে শির, অর্থাৎ মৃত্তিকাস্পর্শকারী পবিত্রতাজনক শিখা আছে, তাহা তুমি বিমদের প্রতি প্রেরণ কর।
২। হে অগ্নি! যাহারা তোমাকে সুশোভিত করে, তাহারা বর্ধিষ্ণু হয় এবং বিস্তর ঘোটক প্রাপ্ত হয়। এই সরলগামী রসসেককারী আহুতি তোমাতে যাইতেছে। আমি বিমদ, আমার নিমিত্ত বৃদ্ধি পাইতেছ।
৩। যজ্ঞকর্তারা আহুতিপূর্ণ পাত্র লইয়া, যেন তোমাকে আর্দ্র করিয়া দিবেন, এইরূপে তোমার নিকটে উপবেশন করিয়াছেন। তুমি কখন কৃষ্ণ, কখন শুভ্র, নানা শোভা ধারণ করিতেছ। আমি বিমদ, আমার জন্য বৃদ্ধি পাইতেছ।
৪। হে বলশালী! হে অমর! যে প্রকার ধন তোমার ইচ্ছা হয়, সেই সমস্ত বিবিধ প্রকার ধন আনিয়া দাও, তাহা হইলে আমরা যজ্ঞের সময় অন্নদান করিব। আমি বিমদ, আমার নিমিত্ত বৃদ্ধি পাইতেছ।
৫। অথবা নামক ঋষি অগ্নিকে উৎপন্ন করিয়াছেন, এই অগ্নি সর্ব প্রকার যজ্ঞকাৰ্য জানেন। ইনি যজ্ঞ কর্তার দূতস্বরূপ হইয়া দেবতাদিগকে সংবাদ দেন। ইনি যমের প্রিয়পাত্র। আমি বিমদ, আমার জন্য কমনীয়রূপে বৃদ্ধি পাইতেছ ।
৬। যজ্ঞের সময় হোমকাৰ্য্য আরম্ভ হইলে, তোমার আরাধনা করা হয়। তুমি দাতাব্যক্তিকে সর্ব প্রকার অভিলষিত ধন বিতরণ কর। আমি বিমদ, আমার জন্য কমনীয়রূপে বৃদ্ধি পাইতেছ।।
৭। হে অগ্নি! মনুষ্যগণ তোমাকে যজ্ঞের সময় পুরোহিত করিয়া স্থাপন করে; কারণ তুমি পুরোহিতের ন্যায় সুশ্রী, তোমার অবয়ব যেন ঘৃতাক্তের ন্যায় চিকন, তুমি শিখাদ্বারা সকলই জানিতে পার, তোমার মূর্তি শুভ্র। আমি বিমদ, আমার জন্য কমনীয়রূপে বৃদ্ধি পাইতেছ।
৮। হে অগ্নি! তুমি শ্বেতবর্ণ শিখাসহকারে প্রকাণ্ডমূর্তি ধারণ কর। তুমি বৃষের ন্যায় শব্দ করিতে থাক, তুমি ভগিনীর গর্ভে রেতঃ সেক কর। আমি বিমদ, আমার জন্য কমনীয় রূপে বৃদ্ধি পাইতেছ। (১)
————
(১) সায়ণ কহেন উদ্ভিজ্জগণ অগ্নির ভগিনী; অগ্নি হইতে বৃষ্টি, বৃষ্টি হইতে উদ্ভিজ্জদিগের বীজ রোহণ।