ঋগ্বেদ ১০।০০৭
ঋগ্বেদ সংহিতা।। ১০ম মণ্ডল।। সূক্ত ৭
ঋষি ও দেবতা পূর্ববৎ।
১। হে অগ্নি! আকাশ ও পৃথিবী হইতে কল্যাণ আহরণপূর্বক আমাদিগকে দাও। হে দেব! আমাদিগের যজ্ঞের জন্য সর্বপ্রকার অন্ন আহরণ কর। হে সৌম্যমূর্তি! আমরা যেন তোমার জ্ঞানে জ্ঞানবান্ হই; হে দেব! তোমাকে যে এত বৃহৎ বৃহৎ স্তব অর্পণ করিতেছি, সেই কারণে আমাদিগকে রক্ষা কর।
২। হে অগ্নি! তোমার জন্য এই সমস্ত স্তব প্রস্তুত হইয়াছে; তুমি যে সকল গাভী ও ঘোটক ও ধন দিয়াছ, তাহারই জন্য তোমার গুণ কীৰ্ত্তন করা হইতেছে। হে সৌম্যমূর্তি! হে ধনস্বরূপ! যখন মনুষ্য তোমার নিকট ভোগ্যবস্তু প্রাপ্ত হয়, তখন তাহার অনেক প্রকার স্তব আসিয়া উপস্থিত হয়।
৩। অগ্নিকে আমি পিতা ও আত্মীয় জ্ঞান করি; অগ্নিই ভ্রাতা, অগ্নিই চিরকালের বন্ধু। যেমন আকাশস্থ শুভ্রবর্ণ সূর্যমণ্ডলকে লোকে আরাধনা করে, তদ্রূপ আমি প্রকাণ্ড অগ্নির মূর্তিকেই সেবা করিয়া থাকি।
৪। হে অগ্নি। এই সকল স্তব সম্পন্ন হইয়াছে, এই স্তব হইতেই আমরা সকল বস্তু পাইয়া থাকি। আমি সেই ব্যক্তি, যাহার ভবনে তুমি নিত্য নিত্য দেবতাগকে আহ্বান কর এবং রক্ষা কর। সেই আমি যেন যজ্ঞবান্ হই, যেন লোহিতবর্ণ ঘোটক ও প্রচুর অন্ন প্রাপ্ত হই, যেন উজ্জ্বল আলোকসম্পন্ন দিনে তোমার উপর হোমের দ্রব্য অৰ্পণ করি।
৫। উজ্জ্বলমূর্তিধারী পুরুষেরা অগ্নিকে আধান করিলেন, প্রাচীন বন্ধুর ন্যায় তাহাকে সন্তুষ্ট করা উচিত; তিনি যজ্ঞের পুরোহিত, যজ্ঞের সমাপন কর্তা। মনুষ্যবর্গ বাহুসঞ্চালনপূর্বক সেই অগ্নিকে জন্ম দান করিলেন। তিনি রূপধারী দেবতাদিগকে আহ্বান করিবেন বলিয়া তাহাকে সংস্থাপন করা হইল।
৬। হে দেব! দিব্যলোকবাসী দেবতাদিগকে তুমি নিজেই অর্চনা কর। অপরিণতমতি নির্বোধ মনুষ্য তোমার কি সাহায্য করিবে। যেরূপ তুমি সময়ে সময়ে দেবতাদিগকে অর্চনা কর, তদ্রূপ হে সৌম্যমূর্তি! তোমার, আপনার উদ্দেশেও তুমি যজ্ঞ সম্পন্ন কর।
৭। হে অগ্নি! আমাদিগের রক্ষাকর্তা হও, আমাদিগের গাভীগণের রক্ষাকর্তা হও, আমাদিগের অন্নের উৎপাদনকর্তা এবং অন্নের সঞ্চয়কা হও। হে পূজনায়! হোম করিবার সামগ্রী সমস্ত আমাদিগকে দান কর, সাবধান হইয়া আমাদিগের দেহ রক্ষা কর।