ঋগ্বেদ ১০।০০৪
ঋগ্বেদ সংহিতা।। ১০ম মণ্ডল।। সূক্ত ৪
ঋষি ও দেবতা পূর্ববৎ
১। আমাদিগের যজ্ঞে তুমি পূজনীয় হইয়া উপস্থিত হইয়াছ, অতএব তোমাকে অর্চনা করি, তোমাকে স্তব করি। হে অগ্নি! হে প্রাচীন রাজা। মরুভূমির মধ্যবর্তী জলাশয়ের নায় তুমি যজ্ঞকর্তা ব্যক্তির প্রীতিপ্ৰদ হইয়া থাক।
২। হে যুবাপুরুষ! যেমন গাভীগণ উষ্ণ গোষ্ঠের মধ্যে শীত হইতে রক্ষা পায়, তদ্রূপ লোকে তোমার শরণাগত হয়। মনুষ্যগণ তোমাকে দূতের ন্যায় দেবতাদিগের নিকট প্রেরণ করে। তুমি প্রকাণ্ড মূর্তিতে দ্যুলোক, ও ভূলোক মধ্যে দীপ্তিবিশিষ্ট হইয়া বিচরণ কর।
৩। পৃথিবী যেন তোমার মাতা, তুমি যেন তাহার বিজয়ী পুত্র। সেই মাতা তোমাকে আলিঙ্গন করিয়া সমাদর করেন। হে উজ্জ্বল! যেরূপ পশুকে ছাড়িয়া দিলে সে গোষ্ঠের দিকে যায়, তদ্রূপ তুমি আকাশের দিকে অভিমুখ হইয়া গমন কর।
৪। হে অগ্নি! তোমার মোহ নাই, আমরাই মূর্খ। তোমার মহত্ব আমরা অবগত নহি, তুমিই তাহা জান। সেই অগ্নি কাষ্ঠসমূহ আচ্ছাদনপূর্বক শয়ন করিতেছেন, জিহ্বাদ্বারা ভক্ষণ করিতে করিতে বিচরণ করিতেছেন, তিনি প্রজাবর্গের অধিপতি হইয়া আহুতি আস্বাদন করিতেছেন।
৫। যজ্ঞকর্তারা একমন হইয়া যে অগ্নি সৃষ্টি করিলেন, সেই অগ্নি কোথাও পুরাতন কাঠের উপর নূতন হইতেছেন, তিনি ধূমস্বরূপ পতাকা তুলিয়া কাষ্ঠের উপর শুভ্রমূর্তি ধারণ করিতেছেন। তিনি স্নান করেন না, বৃষের ন্যায় জলের দিকে যাইতেছেন।
৬। যেরূপ অসংসাহসিক দুই দস্যু বন মধ্যে পথিককে রজ্জ্বারা বন্ধ করিয়া আকর্ষণ করে (১), তদ্রূপ আমার দুই হন্তদশ অঙ্গুলি প্রয়োগপূর্বক যজ্ঞ কাষ্ঠ হইতে অগ্নি মন্থন করিতেছে। হে অগ্নি! তোমার নিমিত্ত এই নূতন স্তব রচনা করিলাম। তোমার শুভ্রালোকবিসারী অবয়ব লইয়া তুমি যেন রথ যোজনাপূৰ্ব্বক এস্থানে আগমন কর।
৭। হে জ্ঞানবান্ অগ্নি! এই যজ্ঞীয় দ্রব্য তোমাকে দিলাম, এই নমস্কার করিলাম, এই স্তব যেন সর্বদাই তোমার সম্ভাষণের জন্য প্রয়োগ করিতে পারি। হে অগ্নি! আমাদিগের পুত্রপৌত্রদিগকে রক্ষা কর; অনন্তমনা হইয়া আমাদিগের দেহ রক্ষা কর।
——-
(১) বনমধ্যে দস্যুর উল্লেখ।