ঋগ্বেদ ০৮।০৭০

ঋগ্বেদ ০৮।০৭০
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৮ম মণ্ডল সূক্ত ৭০
ইন্দ্র দেবতা। পুরুহণ্মা ঋষি।

১। যিনি মনুষ্যগণের রাজা, যিনি রথে গমন করেন, যাহার গমনে কেহ বাধা দিতে পারে না, সমস্ত সৈন্যের উদ্ধারকর্তা, সেই জ্যেষ্ঠ বৃত্রহা ইন্দ্রকে স্তব করি।

২। হে পুরুহন্মা! রক্ষাৰ্থ ইন্দ্রকে অলঙ্কৃত কর। তোমার পালক ইন্দ্রের দুইপ্রকার স্বভাব। তিনি হস্তে দর্শনীয় বজ্র ধারণ করেন, ঐ বজ্র আকাশে দৃশ্যমান সূর্যের ন্যায়।

৩। সর্বদা বৃদ্ধিশীল, সকলের স্তুত্য, মহান ও অন্যের অতিভবকর ইন্দ্রকে যিনি যজ্ঞের দ্বারা অনুকুল করেন, তিনি ভিন্ন অন্য ব্যক্তি কর্মের দ্বারা ইন্দ্রকে ব্যাপ্ত করিতে পারে না।

৪। অন্যের অসহ্য, উগ্র ও শত্রুসেনার অভিভবকর ইন্দ্রকে স্তব করি। ইন্দ্র জন্মগ্রহণ করিলে মহতী ও বহুবেগবিশিষ্টা ধেনু সকল স্তুতি করিয়াছিল, দ্যুলোক সকল এবং পৃথিবী সকলও স্তুতি করিয়াছিল।

৫। হে ইন্দ্র! দ্যুলোক তোমার পরিমাণ করিতে পারে না, পৃথিবী শত শত হইলেও তোমার পরিমাণ করিতে পারে না, সহস্ৰ বুৰ্য্যও প্রকাশ করিতে পারে না, যাহা কিছু জন্মিয়াছে, তাহা এবং দ্যাবাপৃথিবী তোমার পরিমাণ করিতে পারে না।

৬। হে অভিলাষপ্রদ, অত্যন্ত বলবান, ধনবান, বজ্রবান ইন্দ্র! তুমি মহৎ বলের দ্বারা বল ব্যাপ্ত করিয়াছ। আমাদের গোসমূহের নিমিত্ত আমাদিগকে বিচিত্র রক্ষাকাৰ্য্য দ্বারা রক্ষা কর।

৭। হে দীর্ঘায়ু ইন্দ্র! যে ব্যক্তি শ্বেতবর্ণ অশ্বদ্বয়কে রথে যোজিত করে, ইন্দ্র তাহারই জন্য হরিদ্বয় যোজিত করেন। যে ব্যক্তি দেবরহিত, সে সমস্ত অন্ন পায় না।

৮। তোমরা পূজনীয়, মহনীয় এবং দানার্থ মিলিত ইন্দ্রের পরিচর্যা কর। জলা লাভার্থ ইন্দ্রকে আহ্বান করা উচিত; নিম্নস্থল লাভার্থ ইন্দ্রকে আহ্বান করা উচিত; সংগ্রামে আহ্বান করা উচিত।

৯। হে বাসপ্রদ, শূর ইন্দ্র! তুমি আমাদিগকে মহৎ ধন লাভের জন্য উত্থাপিত কর। হে শূর! হে মঘবা! হে ইন্দ্র! মহৎ ধন দানের জন্য এবং মহতী কীর্তি দানের জন্য উদ্যোগবিশিষ্ট হও।

১০। হে ইন্দ্র! তুমি যজ্ঞাভিলাষী, যে তোমাকে নিন্দা করে, তাহার ধন অপহরণ করিয়া তুমি অত্যন্ত প্রীতি প্রাপ্ত হও। হে তর্পণীয়, প্রভূত ধনবিশিষ্ট ইন্দ্র! তুমি উরুদ্বয়ের মধ্যে আমাদিগকে আচ্ছাদিত কর; আর বধ কর, এবং অস্ত্রের দ্বারা দাসকে মারিয়া ফেল(১)।

১১। হে ইন্দ্র! তোমার সখা পর্বত অন্যরূপ ব্ৰতধারী, অমানুষ, যজ্ঞরহিত, দেবদ্বেষী ব্যক্তিকে স্বর্গ হইতে নিম্নে নিক্ষেপ করেন; তিনি দস্যুকে মৃত্যুর হস্তে প্রেরণ করেন।

১২। হে বলবান ইন্দ্র! তুমি আমাদের জন্য এই ভাজা যবের ন্যায় গোসমূহকে হস্তে গ্রহণ কর; তুমি আমাদিগকে অভিলাষ করিতেছ, আরও অভিলাষ করিয়া আরও গ্রহণ কর।

১৩। হে সখাগণ! কৰ্ম্ম করিতে ইচ্ছা কর। সেই হিংসাকারী ইন্দ্রকে কেমন করিয়া স্তুতি করিব? তিনি শত্রুগণের ভক্ষক এবং সুরী; তিনি কখনও অবনত হন না।

১৪। হে সকলের পূজনীয় ইন্দ্র! বহুসংখ্যক ঋষি এবং হব্যদায়ীগণ তোমার স্তব করে। হে হিংসক ইন্দ্র! তুমি এক এক করিয়া বহুতর প্রকারে স্তোতাগণকে বহুবৎস দান কর।

১৫। এই মঘবা তিন জন হিংসকের নিকট হইতে যুদ্ধে বিজিত, গো ও বৎস কর্ণে ধারণ করত আমাদের নিকট আনয়ন করুন। স্বামী এই রূপে হননার্থ অজাকে আনয়ন করে।


(১) ১০ ও ১১ সূক্তে অনার্য্য শত্রুদিগের উল্লেখ।