ঋগ্বেদ ০৮।০৪৯

ঋগ্বেদ ০৮।০৪৯(১)
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৮ম মণ্ডল সূক্ত ৪৯(১)
ইন্দ্র দেবতা।

১। আমি যাহাতে ধন লাভ করিতে পারি, এইরূপে সুন্দর ধনবিশিষ্ট ইন্দ্রকে তোমাদের সম্মুখীন করতঃ অৰ্চনা কর। তিনি মঘবা ও বহুধনযুক্ত, তিনি স্তোতাগণকে সহস্র সহস্র দান করিয়া থাকেন।

২। তিনি সগৰ্বে গমন করিতেছেন, যেন শত সেনার পতি, তিনি হব্যদায়ীর জন্য বৃত্রবধ করিতেছেন। তিনি বহুলোকের পালক, তাহার উদ্দেশে প্রদত্ত রস পর্বতের রসের ন্যায় প্রীত করে।

৩। যে সকল সোম মদকর, হে স্তুতিভাক ইন্দ্র! তোমার জন্য তাহা অভিযুত হইয়াছে। হে বজ্রবান শূর! ধনাৰ্থ জল সকল সম্প্রতি আপন বাসস্থান স্বরূপ সরোবরকে পূর্ণ করিতেছে।

৪। তুমি সোমের পাপশূন্য, ত্রাণকারী, স্বৰ্গপ্রদ, মধুরতম রস পান কর। কারণ তুমি প্রমত্ত হইলে আপনিই গর্বিত হইয়া থাক এবং ক্ষুদ্রার ন্যায় আমাদিগকে অভিলষিত দান করিয়া থাক।

৫। হে অন্নবান ইন্দ্র! কণ্বগণের উদ্দেশে তুমি যে প্রীতিকর দান করিয়াছ, সেই দান স্তোমকে স্বাদু করিতেছে, অভিষবনকারিগণ আহ্বান করিলে, তুমি অশ্বের ন্যায় সেই স্তোম অভিমুখে দ্রুত আগমন কর।

৬। সম্প্রতি আমরা বিভূতিবিশিষ্ট, অক্ষয়ধনযুক্ত, উগ্র, বীর ইন্দ্রের নিকট নমস্কারের সহিত গমন করিব। হে বজ্রযুক্ত ইন্দ্র! জলবিশিষ্ট কূপ যেমন জল সেক করে, সেইরূপ স্তোত্র সকল তোমায় সিক্ত করিতেছে।

৭। এক্ষণে যেখানেই থাক, যজ্ঞেই থাক, অথবা পৃথিবীতেই থাক, সেই স্থান হইতেই, হে উগ্র মহামতি ইন্দ্র! তুমি উগ্র এবং আশুগামী অশ্বের সহিত আমাদের যজ্ঞে আগমন কর।

৮। তোমার যে গমনশীল হরিগন আছে, তাহারা বায়ুর ন্যায় শীঘ্রগামী ও শত্রুপরাভবকারী। তুমি উহাদিগের সাহায্যে মনুষ্যগণের নিকট গমন কর এবং সমস্ত বস্তুজাত দশনার্থ জগতে গমন করিয়া থাক।

৯। হে ইন্দ্র! তোমার এতৎপরিমিত গোবিশিষ্ট ধন যাচ্ঞা করি। হে মঘবা! যেহেতু ইয়ুমি মেধ্যাতিথি ও নীপাতিথিকে ধন বিষয়ে রক্ষা করিয়াছিলে।

১০। হে মঘবা! যেহেতু তুমি কণ্ব, ত্রসদস্যু, পকথ, দশব্রজ, গোশর্ফ ও ঋজিশ্বাকে গোযুক্ত ও হিরণ্যযুক্ত ধন দান করিয়াছিলেন।

————

(১) ৪৯ হইতে ৫৯ এই ১১টি সূক্তকে বালখিল্য কহে। সায়ণাচার্য্য এই বালখিল্য সূক্তগুলির টিকা দেন নাই, সুতরাং এগুলির অনুবাদ অতিশয় শ্রমসাধ্য। ঐতরেয় ব্রাহ্মণের টিকায় সায়ণাচার্য্য বলিয়াছেন, যে আটটি মাত্র বালখিল্য সূক্ত আছে, কিন্তু মক্ষমূলরের প্রকাশিত গ্রন্থে একাদশটি দেখা যায়, বোধহয় সায়ন যে গ্রন্থলিপি দর্শন করিয়াছিলেন, তাহাতে আটটি মাত্র ছিল। যাহা হউক এই বালখিল্য সূক্তগুলিকে অতি প্রাচীনকাল হইতে ঋগ্বেদের অন্য সূক্ত হইতে কতকটা পৃথকভাবে নির্দেশ করা হইয়াছে। ঋগ্বেদের সূক্ত গণনার সময় এইগুলি লইয়া গুণিলে ১০২৮ সূক্ত হুয়, এগুলি ছাড়িয়া গুণিলে ১০১৭ সূক্ত হয়।