ঋগ্বেদ ০৮।০৩৫

ঋগ্বেদ ০৮।০৩৫
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৮ম মণ্ডল সূক্ত ৩৫
অশ্বিদ্বয় দেবতা। অত্রিগোত্রীয় শ্যাবাশ্ব ঋষি।

১। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা, অগ্নি, ইন্দ্র, বরুণ, বিষ্ণু, আদিত্যগণ, রুদ্রগণ, ও বসুগণের সহিত একত্রে এবং উষা ও সূর্‍্যের সহিত মিলিত হইয়া সোম পান কর।

২। হে বলবান অশ্বিদ্বয়! তোমরা সমস্ত প্রজ্ঞা, ভূতজাত, দ্যূলোক, পৃথিবী ও পর্বতের সহিত একত্রে এবং উষা ও সূর্যের সহিত মিলিত হইয়া সোম পান কর।

৩। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা এই যজ্ঞে ভক্ষণকারী ত্রয়স্ত্রিংশ সংখ্যক দেবগণের সহিত (১) মরুৎগণ ও ভৃগুগণের সহিত একত্রে এবং ঊষা ও সূৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া সোম পান কর।

৪। হে দেব অশ্বিদ্বয়! তোমরা যজ্ঞ সেবা কর, আমার আহ্বান জ্ঞাত হও, এই যজ্ঞে সমস্ত সবন অবগত হও, ঊষা ও দুৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া আমাদের অন্ন গ্রহণ কর।

৫। হে দেব অশ্বিদ্বয়! যুবা পুরুষ যেরূপ কন্যার আহ্বান সেবা করে, সেইরূপ তোমরা এই যজ্ঞে স্তোম সেবা কর। এই যজ্ঞে সমস্ত সবন অবগত হও, ঊষা ও সুৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া আমাদের অন্ন গ্রহণ কর।

৬। হে দেব অশ্বিদ্বয়! আমাদের স্তুতি সেবা কর, যজ্ঞ সেবা কর, এই যজ্ঞে সমস্ত সবন অবগত হও, ঊষা ও সূয্যের সহিত মিলিত হইয়া আমাদের অন্ন গ্রহণ কর।

৭। যেমন হারিদ্রব পক্ষিদ্বয় বনে পতিত হয়, সেইরূপ তোমরা অভিযুত সোমাভিমুখে পতিত হও। মহিষদ্বয়ের ন্যায় উহা অবগত হও, ঊষা ও সূৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া ত্রিমার্গে গমন কর।

৮। হে অশ্বিদ্বয়! হংসদ্বয়ের ন্যায় এবং পথিকদ্বয়ের ন্যায় অভিযুত সোমাভিমুখে পতিত হও এবং মহিষদ্বয়ের ন্যায় অবগত হও, ঊষা ও সূর্যের সহিত মিলিত হইয়া ত্রিমার্গে গমন কর।

৯। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা শ্যেনদ্বয়ের নযায় অভিযুত সমাভিমুখে পতিত হও এবং মহিষদ্বয়ের নযায় অবগত হও, উষা ও সূর্যের সহিত মিলিত হইয়া ত্রিমার্গে গমন কর।

১০। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা পান কর, তৃপ্ত হও, আগমন কর, সন্তান দান কর ও ধন দান কর এবং ঊষা ও সূৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া আমাদিগকে বল দান কর।

১১। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা জয়লাভ কয়, প্রশংসা কর, রক্ষা কর, সন্তান দান কর ও ধন দান কর এবং উষা ও সূর্যের সহিত মিলিত হইয়া আমাদিগকে বল দান কর।

১২। হে অশ্বিদ্বয়!! তোমরা শত্ৰু বিনাশ কর, মিত্রযুক্ত হইয়া গমন কর, সন্তান দান কর ও ধন দান কর এবং ঊষা ও সূৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া আমাদিগকে বল দান কর।

১৩। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা মিত্র ও বরুণযুক্ত ধৰ্ম্মবান এবং মরুৎগণযুক্ত। তোমরা স্তোতার আহবানাভিমুখে গমন কর এবং ঊষা ও সুর্য্য ও আদিত্যগণের সহিত একত্রে আগমন কর।

১৪। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা, অঙ্গিরাগণ, বিষ্ণু ও মরুৎগণের সহিত স্তোতার আহবানাভিমুখে গমন কর এবং ঊষা ও সূৰ্য্য ও আদিত্যগণের সহিত একত্রে গমন কর।

১৫। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা ঋভু, অভীষ্টবর্ষী বাজ ও মরুৎগণে যুক্ত হইয়া স্তোতার আহ্বানাভিমুখে গমন কর এবং ঊষা, সূৰ্য্য ও আদিত্যগণের সহিত একত্রে গমন কর।

১৬। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা স্তোত্র জয় কর এবং কর্ম জয় কর। রাক্ষসগণকে বধ কর ও রাক্ষসসমূহ শাসন কর। উষা এবং সূৰ্য্যের সহিত একত্রে অভিষবকারীর সোম পান কর।

১৭। হে অশ্বিদ্বয়! তমরা বল হয় কর ও মনুষ্যগনকে জয় কর, রক্ষগণকে বধ কর ও রাক্ষসসমূহ শাসন কর। উষা এবং সূৰ্য্যের সহিত একত্রে অভিষবকারীর সোম পান কর।

১৮। হে অশ্বিদ্বয়! ধেনু জয় কর এবং লোক সকল জয় কর, রক্ষগণকে বধ কর ও রাক্ষসসমূহ শাসন কর। ঊষা এবং সূৰ্য্যের সহিত একত্রে অভিষবকারীর সোম পান কর।

১৯। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা শত্রুগণের গর্ব খর্বকারী তোমরা যেরূপ অত্রির স্তুতি শ্রবণ করিতে, সেইরূপ সোমাভিষবকারী শ্যাবার্শ্বের মুখ্য স্তুতি শ্রবণ কর। উষা এবং সূৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া প্ৰাতঃকালের যজ্ঞে সোম পান কর।

২০। হে অশ্বিদ্বয়! শ্যাবাশ্বের সুন্দর স্তুতি আভরণের ন্যায় গ্রহণ কর। ঊষা এবং সুৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া প্ৰাতঃকালের যজ্ঞে সোম পান কর।

২১। হে অশ্বিদ্বয়! অশ্বরজ্জুর ন্যায় শ্যাবাশ্বের যজ্ঞাভিমুখে গমন কর। ঊষা এবং সুৰ্য্যের সহিত মিলিত হইয়া প্ৰাতঃকালের যজ্ঞে সোম পান কর।

২২। হে অশ্বিদ্বয়! তোমাদের রথ আমাদের অভিমুখে আনয়ন কর, সোমরূপ মধু পান কর, যজ্ঞে আগমন কর, সোমের অভিমুখে আগমন কর। আমি রক্ষাভিলাষী হইয়া তোমায় আহ্বান করিতেছি। তুমি হব্যদাতাকে রত্ন দান কর।

২৩। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা নেতা, আমি বিচক্ষণ, আমার এই প্রস্থিত মনোবাক্যযুক্ত যজ্ঞে সোমপানার্থে আগমন কর, সোমের অভিমুখে আগমন কর। আমি রক্ষাভিলাষী হইয়া তোমায় আহ্বান করিতেছি। তুমি হব্যদাতাকে রত্ন দান কর।

২৪। হে দেব অশ্বিদ্বয়! তমরা অভিযুত স্বাহাকৃত সোমে তৃপ্তিলাভ কর, যজ্ঞে আগমন কর, সোমের অভিমুখে আগমন কর, আমি রক্ষাভিলাষী হইয়া তোমায় আহ্বান করিতেছি। তুমি হব্যদাতাকে রত্ন দান কর।

————

(১) “৩৩” জন দেবের উল্লেখ।