ঋগ্বেদ ০৭।০২১
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৭ম মণ্ডল সূক্ত ০২১
ইন্দ্র দেবতা। বসিষ্ঠ ঋষি।
১। দীপ্ত, গব্যমিশ্ৰিত সোম অভিযুত হইয়াছে। এই ইন্দ্র স্বভাবতঃই ইহাতে সঙ্গত হন। হে হর্য্যশ্ম! তোমার যজ্ঞের দ্বারা প্রবোধিত করিব। সোমজনিত মত্ততার কালে আমাদের স্তোত্র অবগত হও।
২। যজমানগণ যজ্ঞে গমন করিতেছেন, বর্হি বিস্তীর্ণ করিতেছেন, যজ্ঞ স্থলে প্রস্তর সকল দুদ্ধর শব্দ করে। অন্নবান, দূরগামিশব্দবিশিষ্ট, ঋত্বিক-সঙ্গত, বর্ষণকারী প্রস্তর সকল গৃহ হইতে গৃহীত হইতেছে।
৩। হে শূর ইন্দ্র! তুমি বৃত্রকর্ত্তৃক আক্রান্ত বহুতর জল প্রেরণ করিয়াছিলে। তুমি আছ বলিয়া নদী সকল রথিগণের ন্যায় নিৰ্গত হয়। সমস্ত কৃত্রিম ভুবন ভয়ে কম্পিত হয়।
৪। ইন্দ্র মনুষ্যের হিতকর সমস্ত কৰ্ম্ম অবগত হইয়া এবং আয়ুধদ্বারা ভয়ঙ্কর হইয়া এই শত্ৰুগণকে ব্যাপ্ত করিয়াছিলেন; তাহাদিগের নগর সকল কম্পিত করিয়াছিলেন। তিনি হৃষ্ট,মহিমাযুক্ত ও বজ্রহস্ত হইয়া তাহাদিগকে বধ করিয়াছিলেন।
৫। হে ইন্দ্র! রাক্ষসগণ যেন আমাদিগকে হিংসা না করে। হে বলবত্তম ইন্দ্র! রাক্ষসগণ যেন প্রজাগণ হইতে আমাদিগকে পৃথক না করে। স্বামী ইন্দ্র যেন বিষম জন্তুর বধে উৎসাহান্বিত হন। শিশ্ন দেবগণ যেন আমাদিগের যজ্ঞ বিঘ্ন না করেন।
৬। হে ইন্দ্র! তুমি কর্মদ্বারা পৃথিবীতে বর্তমান জন্তু সকলকে অভিভূত কর। লোক সকল তোমার মহিমা ব্যাপ্ত করিতে পারে না। তুমি নিজ বলে বৃত্রকে বধ করিয়াছ। শত্রু বা যুদ্ধদ্বারা তোমার অন্ত লাভ করিতে পারে নাই।
৭। হে ইন্দ্র! পূর্ব দেবগণও বল এবং প্ৰাণিবধ বিষয়ে তোমার বল অপেক্ষা অল্প বলিয়া বিদিত হইয়াছিলেন। ইন্দ্র শক্রগণকে অভিভূত করিয়া ভক্তগণকে ধন দান করেন। স্তোতাগণ অন্নলাভার্থ ইন্দ্রকে আহ্বান করেন।
৮। হে ইন্দ্র! তুমি ঈশান, স্তোতা রক্ষার জন্য তোমাকে আহ্বান করিতেছে। হে বহুরক্ষক ইন্দ্র! তুমি আমাদের প্রভূত ধনের রক্ষক হইয়াছিলে। তোমার তুল্য যে ব্যক্তি আমাদের হিংসা করে,তাহাকে নিবারণ কর।
৯। হে ইন্দ্র! আমরা স্তুতিদ্বারায় তোমাকে বৰ্দ্ধিত করতঃ সৰ্ব্বদা যেন তোমার সখা হই। তুমি স্বীয় মহিমায় সকলের তারক, তোমার আশ্রয়ে আৰ্য্য স্তোতাগণ যুদ্ধকালে যুদ্ধাৰ্থ আগত হিংসকদিগের(১) বল হিংসা করুন।
১০। হে ইন্দ্র! তুমি আমাদিগকে ধারণ কর, যেন আমরা তোমার দত্ত অন্ন ভোগ করিতে পারি। যে হব্যদায়িগণ নিজেই হব্য প্রদান করে, তাহাদিগকেও ধারণ কর। অত্যন্ত প্রশস্ত স্তুতি কার্য্যে আমার সামর্থ্য হউক, আমি তোমার স্তোতা। তোমরা আমাদিগকে সর্বদা স্বস্তিদ্বারা পালন কর।
————–
(১) অর্থাৎ অনার্য্যদিগের।