ঋগ্বেদ ০৬।২৬
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ২৬
ইন্দ্র দেবতা । ভরদ্বাজ ঋষি ।
১। হে ইন্দ্র! আমরা অরলাভের নিমিত্ত সোমরস অভিযুত করিয়া তোমাকে আহ্বান করিতেছি, তুমি আমাদিগের আহ্বান শ্রবণ কর। ভবিষ্যতে যখন মনুষ্যগণ যুদ্ধার্থ সমবেত হইবে তখন তুমি আমাদিগকে নিশ্চিতরূপে রক্ষা করিও।
২। হে ইন্দ্র! সুপ্রাপ্য প্রচুর অন্নলাভের নিমিত্ত বাজিনীর পুত্র ভরদ্বাজ অন্নসহকারে তোমাকে আহ্বান করিতেছে। তুমি সজ্জনপালক, ও দুর্জন হইতে রক্ষাকারী, তোমাকে তিনি উপদ্রব নিবারণার্থ আহ্বান করিতেছেন। তিনি মুষ্টিবলদ্বারা শত্রুনিধনকারী, তিনি যৎকালে ধেনুগণের জন্য যুদ্ধ করেন, তখন তোমারই উপর নির্ভর করেন।
৩। হে ইন্দ্ৰ! তুমি কবির ভার্গব ঋষির অন্নলাভেচ্ছা উত্তেজিত করিয়াছ। তুমি হব্যদাতা কুৎসের নিমিত্ত শুষ্ণকে ছেদন করিয়াছ। তুমি অতিথিগ্ব দিবোদাসকে সুখী করিবার নিমিত্ত সেই শম্বরের শিরশ্ছেদন করিয়াছ যে আপনাকে দুর্ভেদ্য জ্ঞান করিত।
৪। হে ইন্দ্ৰ! তুমি বৃষভ নামক রাজাকে যুদ্ধসাধন বিপুল রথ প্রদান করিয়াছ। যখন তিনি দশ দিবস যুদ্ধে ব্যাপৃত ছিলেন, তখন তুমি তাহাকে রক্ষা করিয়াছ। তুমি বেতসুর সহিত তুগ্রকে সংহার করিয়াছ। তুমি স্তবকারী তুজি নামক রাজার সমৃদ্ধি বিধান করিয়াছ।
৫। হে ইন্দ্ৰ! তুমি শক্রনিহন্তা, তুমি প্রশংসনীয় কাৰ্য্যসম্পাদন করিয়াছ, কারণ, হে বীর! তুমি শত শত ও সহস্ৰ সহস্ৰ শম্বর সৈন্য বিদারিত করিয়াছ; পৰ্ব্বত হইতে নির্গত শম্বরকে বধ করিয়াছ এবং বিচিত্র রক্ষাদ্বারা দিবোদাসকে রক্ষা করিয়াছ।
৬। হে ইন্দ্ৰ! শ্রদ্ধাসহকারে অমুষ্ঠিত কাৰ্য্য ও সোমরসদ্ধার উল্লাসিত হইয়া তুমি দভীতি রাজার নিমিত্ত চুমুরিকে বধ করিয়াছ এবং পিঠীনাকে রজি(১) প্রদান করিয়া নিজ বুদ্ধিবলে এককালে ষষ্টিসহস্ৰ যোদ্ধাকে বিনষ্ট করিয়াছ।
৭। হে বীরসহচর, বলবত্তম ইন্দ্ৰ! তুমি ত্রিভুবনরক্ষক ও শক্রবিজয়ী, স্তোতৃবর্গ তোমাকর্তৃক প্রদত্ত যে উৎকৃষ্ট মুখ ও বলের প্রশংসা করেন, আমিও যেন মদীয় স্তোতৃবর্গের সহিত সেই উৎকৃষ্ট মুখ ও বল লাভ করি।
৮। হে পূজনীয় ইন্দ্ৰ! আমরা ত্বদীয় মিত্রভূত ও স্তবকারী, আমরা যেন ধনলাভার্থ সম্পাদিত এই স্তোত্রদ্বারা তোমার নিরতিশয় প্রতিভাজন হই। প্রন্তর্দনের পুত্র মদীয় যজমান ক্ষত্রশ্রীঃ নামক রাজা যেন শক্রসংহারও স্থানলাভ করিয়া শ্রেষ্ঠতা লাভ করেন।
———-
(১) মূলে ‘রজিম্’ আছে। ‘রজিম্ এতদ্বাখ্যাং কন্যাং বা রাজ্যং বা’—সায়ণ।