আজো ঘুম ভাঙলো সকাল সাতটায়
চিরুনীতে কাঁচা পাকা কিছু চুল উঠে এলো আজো,
ধুমায়িত চায়ের কাপের সঙ্গে এলো
খবর কাগজ।
ইচ্ছে হয় বিছানায় জলচর প্রাণীর মতন সুনসান
আরো কিছু সময় কাটা।
প্ল্যাস্টিকের বালতিতে নামে
ট্যাপের পানির কৃশ ধারা, ঘরে ভাসে
পান্নালাল ঘোষের ভৈরবী; অকস্মাৎ
দুপুরে চিলের ডাকে আমার শৈশব ফিরে আসে
শ্লেট, চকখড়ি আর বাদামি রঙের
ব্যাগ হাতে। গলিতে আবছা কণ্ঠস্বর। আরো কিছু
প্রিয় স্মৃতি-আলোড়ণকারী শব্দ শোনার আশায়
ইচ্ছে হয় কান পেতে থাকি।
কেউ এসে ছোঁবে ব’লে
গোলাপ প্রতীক্ষা করে টবে, ফুলদানি
ডাকে তাকে সামাজিক আঙ্গিকে অথচ
সে কেবলি দারুণ অসামাজিক কারো
হাতে যেতে চায়,
মেঘের হৃদয় ফুঁড়ে কনে-দেখা-আলোয় চকিতে
উদ্ভাসিত কারো মুখ। কবে
দেখা হয়েছিলো তার সঙ্গে? মনে আছে
দুপুরকে ম্লান ক’রে তার ব’সে-থাকা বিকেলের বারান্দায়
দাঁড়ানো নিভৃত ছন্দে, সেই মুখ দেখছি এখন
স্মৃতি নাকি মেঘের কৃপায়!
ইচ্ছে হয়, সেদিকে তাকিয়ে থাকি বেশ কিছুকাল।
ছোটছুটি চলছেই, এক বিন্দু থেকে
আরেক বিন্দুতে নিত্য চরকির মতো
ঘোরা ফেরা। এরই মধ্যে দ্রুত
আকাশে তাকানো, বকুলের ঘ্রাণ নেয়া আর কাউকে সী-অফ
করতে এসে ইস্টিশানে কেমন অস্থির
পায়চারি করা। ট্রেন ইস্টিশান ছেড়ে
যাবার পরেও
কোলাহল-কমে-আসা প্ল্যাটফর্মে ইচ্ছে হয় একটু দাঁড়াই।