আমি নেই ঝর্ণাতলে দাঁড়ানো, কিংবা নেই ঘাসের
বালিশে শুয়ে কোনও বাগানে। আমার ওপর ঝরছে না
ফুলের সুগন্ধি পাপড়ি। আমার কাছাকাছি পাখিদের
নাচানাচি কেউ দেখতে পাবে না এখন। আমি নিজের
ছোট ঘরে বসে আছি কাঠের চেয়ারে। আষাঢ়ের প্রথম
দিন আজ, অথচ বাইরে রগচটা রোদের বাজখাঁই আওয়াজ।
বিকেলবেলা অথবা অভিমানী সন্ধ্যায় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি
নামবে কিনা জানি না। ইলেকট্রিক তারে আটকে-পড়া হাওয়ায়
মৃদু কম্পমান কাটা ঘুড়ির মতো আমার হৃদয় তাকায়
শূন্যতায়। কিছুদিন আগেও তুমি এখানে আসতে রাত্রিকে
শাড়ির ঝলসানিতে উৎসুক ক’রে পরিবেশকে সোনালি
আভায় চমকে দিয়ে অবয়বের সৌন্দর্যে। তুমি এখানে পা রাখার
সঙ্গেই আমার সামান্য ঘর হয়ে উঠত অমরাবতী, নেমে-আসা
নক্ষত্রেরা বাজত নূপুর-রূপে। এখন তুমি আর আসো না ব’লেই
এই ঘর সন্ন্যাসীর নাঙাগুহা; ঘরের চার দেয়াল আর ছাদ ফুঁড়ে
ঝরতে থাকে কর্কশ ভস্মরাশি, মরুভূমির কংকালগন্ধি
বালি। এই মুহূর্তে আমার বুকের ভেতর হুহু কাঁদছে আষাঢ়।
১৫.৬.৯৭.