আমি আর করবো কত শোক?
অপরাহ্নে পাথরের মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে
খুব উঁচু বুনো ঘাস সরাতে সরাতে
মাঝে মধ্যে থমকে দাঁড়াই। ভূগর্ভস্থ কোনো স্তব্ধ
সভ্যতার মতো নিস্তব্ধতা চর্তুদিকে।
এদিক ওদিক, সবদিকে
খানিক তাকিয়ে, পাথরের মধ্যে দিয়ে
খুব উঁচু বুনো ঘাস সরাতে সরাতে
দু’পায়ে বাজিয়ে নুড়ি এগোই একাকী।
ছায়াচ্ছন্ন পথ, সাঁকো, উঠোন, ইঁদারা
পুরোনো কালো পাম-সু, বিবর্ণ,
বিবাহমণ্ডপ, নৈশ ভোজ, ঝলমলে গোরস্থান,
নানান বয়সী কত মুখ ভেসে ওঠে বারংবার।
খুব উঁচু বুনো ঘাস সরাতে সরাতে
দু’পায়ে বাজিয়ে নুড়ি এগোই একাকী।
খেলাচ্ছলে চড়ুইয়ের নকশা-প্রায় কংকাল একদা
গিয়েছি ভাসিয়ে জলাশয়ে, মনে পড়ে। নিজস্ব কৌতুক ভুলে
হঠাৎ বালক তার ভেজা হাত দেখে সন্ধ্যেবেলা
অবুঝ কান্নায় ঢেউ হয়েছে সবুজ।
পাখির কংকাল আর নিজের আঙুল
ভীষণ অভিন্ন ভেবে কেটেছিল তার সারা রাত।
হিরন্ময়ী তরুণীর ঈষৎ ঘর্মাক্ত
উরুর মতোন দ্বিপ্রহরে
লাশের শিয়রে নতজানু, একজন
কর্পুর মৃতের কাছে কীরকম ব্যবহারযোগ্য
ভেবে খুব বিহবল হয়েছে কোনোদিন,
মনে পড়ে।
নুড়ি আর খুব উঁচু বুনো ঘাস বুকে চেপে, দূরে
পাখির কংকাল হাতে নিয়ে
প্রাচীন শ্যাওলাময় জলাশয়ে ডুবিয়ে দু’হাত
কতিপয় মুখের পিছনে
পাথরের মধ্য দিয়ে ছুটতে ছুটতে
আমি আর করবো কত শোক নিশিদিন?