আচমকা মনে হলো, কারা যেন ঘরের ভেতর
এসেছে অত্যন্ত সন্তর্পণে। অথচ কাউকে আমি
কোথাও দেখতে পাচ্ছি, এমন তো নয়। তাহলে কি
কল্পনা আমাকে কিছু অদৃশ্য সত্তার
মুখোমুখি দাঁড় করাবার
কৌশল নিয়েছে অগোচরে? বসে থাকি
একলা নিশ্চুপ থমথমে ঘরে। সারা
শরীর আমার যেন অন্য কারও শরীরের ভেতরে প্রবেশ
করানো হয়েছে চাতুরীর ছায়াবৃত প্রক্রিয়ায়
নিজেকে বড়ই ফাঁকা ফাঁপা মনে হয়।
আমি কি ডাকবো চড়া গলায় কাউকে? কিন্তু হায়,
কারা ছলনায় কণ্ঠ রোধ করে রেখেছে আমার। হা কপাল,
শত চেষ্টা সত্ত্বেও এখন গলা থেকে
গোঙানি ব্যতীত, হাহাকার ছাড়া কিছু
বেরুবে না কোনওমতে। গলার ভেতরে
হাজার হাজার কাঁটা ছড়ানো রয়েছে, রক্ত ঝরে অবিরাম।
আমার বিরুদ্ধে এ কেমন
ষড়যন্ত্রের মেতেছে রহস্যময় কোন সে এলাকাবাসী? তুমি,
যে আমার পথপ্রদর্শক, সম্ভবত বন্দি আজ মায়াজালে।
আমি তো শুনতে পাচ্ছি ঘণ্টাধ্বনি, মনে হয়, শুভবাদীদের।
তবে কি পুরনো কঙ্কালের হুটোপুটি
হবে শেষ অচিরেই? পূর্ণিমার আলোর জোয়ারে
ভেসে যাবে কণ্ঠকিত অমাবস্যা, আর
শ্যাওলা-জড়ানো কিছু উড়ন্ত করোটি গুঁড়ো হয়ে
ঝরে যাবে ধূধূ তেপান্তরে। কিষাণীরা ভালো ফলনের গীতে
ছন্দিত ঝংকৃত আর রাখালের বাঁশি
দিগন্তের দিকে সুদিনের সুর হয়ে মঞ্জরিত।
এখন আমার ঘরে সহজ সুন্দর অধিষ্ঠিত,
নীরবে ছড়ান তিনি কিছু ফুল চৌদিকে এবং আমি খুব
শ্রদ্ধাভরে কুড়াই সে-ফুল আর আমার ভেতরে
অন্য কেউ জেগে উঠে পূর্ণিমা সৃজনে মগ্ন হয়।
১৬.৭.২০০০