এ জীবন চড়িভাতি নয় বলে মধ্যপথে এক ঝটকায়
তোমাকে ফিরিয়ে দিয়ে বুঝলাম কী ভুল করেছি।
কোনো কোনো উচ্চারণ, হায়, এভাবেই মানুষকে
আজীবন কুরে খায়, এমনকি নদীর, বৃক্ষের কাছে
করে অপ্রস্তুত বার বার। এখন তো দেখছি বিষম ঠেকে-
পারে না খারিজ করতে কোনোমতে, স্মৃতিও তোমাকে।
আমার নিকট থেকে তুমি বিচ্ছিন্ন হলেই, মানে
দূরে স’রে গেলে
হৃদয় শ্মশান হয়। কোথায়? কোথায় তুমি? এই
নাছোড় জিজ্ঞাসা
উন্মত্ত পাখির মতো, যতদিন বেঁচে আছি, চঞ্চুর আঘাতে
আমাকে করবে ছিন্নভিন্ন। এরপর
নিশ্চিন্তির কুটিরে বিশ্রাম করা চেষ্টার অতীত।
এই যে এখন আমি সুন্দর বন্দরপ্রিয় নৌকোর মতন
প্রবেশ করছি এই অজ্ঞাত ভেতরে অগোচরে,
এই যে এখন আমি পোকাকীর্ণ শব আর নক্ষত্রের শুদ্ধ
মিলন ঘটিয়ে পরিপক্ব রাত্রির গম্বুজে ব’সে
লিখছি কবিতা-এই কবিতার ডানদিকে তোমাকে দেখছি,
এই কবিতার
বামপার্শ্বে কম্পমান তোমার বিশদ ছায়া, একা;
আমার কবিতা জুড়ে শুয়ে আছ তুমি, শুধু তুমি।
এবং তোমার হৃৎস্পন্দনের পদ্ধতিতে প্রতি শব্দ
ঈষৎ কম্পনে
জেগে থাকে, তোমার নিঃশ্বাস লেগে বাক্যরাজি দ্রুত মগ্ন হয়
হাঁসের বুকের মতো রাঙা উষ্ণতায়।
এক ধরনের উপস্থিতি এও, হয়তোবা দূর
ভবিষ্যের পদচ্ছাপে পাবে ঠাঁই। অথচ তোমার
এমন নিরাবয়ব উপস্থিতি প্রকৃত সান্ত্বনা
নয় কিছুতেই।
সর্বদা তোমাকে চাই একান্ত নিকটে টাই, দ্যাখো,
আমার প্রতিটি রোমকূপ কী উৎসুক হয়ে রয়,
যেমন কর্কশ ঘাস শিহরিত হয় ঘন ঘন
বৃষ্টির আশায়।