এই শীতদুপুরে কোন্ দিকে মুখ রেখে তুমি দাঁড়ানো?
তুমি কি বসে আছো তোয়ালে বিছিয়ে
তোমার জীবনসঙ্গীর সান্নিধ্যে সমুদ্রতীরের চওড়া
রঙিন ছাতার তলায়?
চারদিকে রোদ ছড়ানো, জল আর বালি
চিকচিক করছে অভ্রের মতো; তোমার
টুকরো টুকরো কথা ভেসে বেড়াচ্ছে
হাওয়ায়, দৃষ্টি মেলে দিয়েছে সমুদ্রের বিশালতায়।
আকাশ আর সমুদ্রের মিলন দেখে
তোমার কি মনে পড়ছে আমাদের চুম্বনের কথা?
মনে কি পড়ছে আমাদের দু’জনের একান্ত
মুখোমুখি বসে থাকার মুহূর্তগুলো? মনে কি
পড়ছে উড়ে-যাওয়া সেই পাখির কথা, যে আমাদের
কোনো কোনো কথা ডানায় মেখে নিয়েছিল?
তোমার অনুপস্থিতির বেদনা সহনীয়
করে তুলতে চাইছি, অথচ অন্তর্গত এক অভাববোধ
কাঁকড়ার মতো আঁকড়ে ধরেছে আমার শ্বাসনালী;
শূন্যতার হারপুন আমাকে
শিকারে সফল ক্রমাগত। নিজেকে দেখতে পাচ্ছি অশেষ
এক কৃষ্ণ গহ্বরে অপ্রতিকার্যরূপে আটক।
কেন তুমি এভাবে চলে যাও পেছনে এক
দীর্ঘচঞ্চু ভয়ঙ্কর পাখিকে রেখে,
যে আমার হৃৎপিণ্ড ঠোকরাতে থাকে বিরামহীন
এবং আমাকেই পান করতে বলে রক্তধারা? কেবলি
তোমার কণ্ঠস্বর শুনে চমকে উঠি, কী এক কুহক
আমাকে নিয়ে যায় কুয়াশাচ্ছন্ন ফণিমনসার বনে।
কে এই দুঃস্বপ্ন-তাড়িত আমাকে মুক্তি দেবে
তুমি ছাড়া? এখন কি এই দুপুরের রোদ, সন্ধ্যার
পাখি, রাত্রির নক্ষত্র, শিশির অথবা জোনাকি,
বলে দেবে আমাকে এই মুহূর্তে তুমি কোথায়?