কোথাও নদীর বাঁক, গাছপালা, কোথাওবা দুঃখময় ধু-ধু মাঠ।
হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত ওরা অহর্নিশ; কখনো পথের মোড়ে থামে,
কখনো বিশ্রাম খোঁজে ক্যাম্পে, কখনোবা
সহসা ছিটকে পড়ে দিগ্ধিদিক। এ যুগে সর্বত্র
ঘরপোড়া লোক, ইউরোপে এশিয়ায় লক্ষ লক্ষ। বিপর্যয়ে
যূথচারী ওরা সব, অথচ একাকী। বিচ্ছিন্নতা
বয়ে বেড়াতেই হয়, এমনকি বাংলাদেশে আমাদেরও।
বাস্তবিক বিশ শতকের গোধূলিতে ছেঁড়া তাঁবু
ঘাড়ে নিয়ে পৌঁছেও আমরা
কুরুক্ষেত্র, মহাপ্রস্থানের
পাত্রপাত্রী। কিন্তু আজ জলেস্থলে কোথাও দেখি না
দুর্গম পথের যাত্রী সেই একা কুকুরের ছায়া।
হঠাৎ দুপুরে ব্যেপে আসে কালসন্ধ্যা
ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে, কলোনিতে যাদের নিবাস
কিংবা যারা বাঁধে ডেরা ফুটপাতে কি গাছতলায়
তাদের শিরায় ডাইনোসরের বিকট চিৎকার
জেগে ওঠে মাঝে-মধ্যে-শুরু হয় অবলীলাক্রমে
আবার মুষলপর্ব; কে কার অস্ত্রের ক্ষিপ্র ভীষণ ঠোকরে
চকিতে ছিটকে পড়ে, বোঝা মুশকিল। এ ক্ষুধিত অন্ধকারে
শক্রমিত্র সবাই একাকার।
ছিন্নভিন্ন নর-নারী, রক্তে
ভাসে পথঘাট কী ব্যাপক আর কৃতান্তের মতো
কিরাতের বিষকালো শরে
অবিরত গোঙায় সভ্যতা বেদনার্ত রৌদ্রজলে।