আমি তো ছিলাম খুব নিচে
সামান্য
নিজস্ব নিয়ে। গুবরে পোকার
নিঃশব্দ চলা, কাছের
কলা গাছের পাতায় রোদের
চিকন পিছলে-যাওয়া,
হাওয়ায় পাতার নড়া দেখে,
বন্ধুর হাতে হাত রেখে,
কাগজের নৌকো বানিয়ে,
তা’ নিয়ে শিশুকে
আনন্দমেলায়
এনে চৌকো ছায়ায় কাটত
আমার বেলা। আমি তো
এমনই ছিলাম।
তোমরা আমাকে হঠাৎ করে
খুব উঁচুতে তুলে দিয়েছ।
এখন আমাকে মেঘ আদর
বুলোয় ক্ষণে ক্ষণে,
নক্ষত্রেরা প্রদক্ষিণ করে
আমাকে,
কালপুরুষ হাত রাখে আমার
মাথায়।
বড় বিব্রত আমি; তোমরা
আমাকে খুব উঁচুতে
তুলে দিয়েছ, ঈগলেরও সাধ্য
নেই আমাকে ছোঁয়,
বিমান আমার পায়ের অনেক
অনেক নিচে উড়ে যায় এবং
ছায়াপথে আমার নিত্যদিনের
হাঁটা।
নিচে তাকাতে পারি না, মাথা
বোঁ বোঁ লাটিম, ভয় হয় কখন
নক্ষত্রগুলো
ঠোকরাতে শুরু করে,
কালপুরুষ যায় ক্ষেপে। হয়ত
ছায়াপথ হবে ভাঙা সাঁকো,
পা হড়কে যাব প’ড়ে।
অত উঁচু থেকে ধুলোয় মুখ
থুবড়ে পড়ার আশঙ্কায়
সর্বক্ষণ কাঁপি তুষার-ঝড়ে
আটকে-থাকা
মানুষের মতো। আমার
নিদারুণ পতনে উল্লসিত
লোকজনের
হাঃ! হাঃ! হাসির কামড়ের
কথা ভেবে আমি দুঃস্বপ্নগ্রস্ত।
১২.৪.৯৪