অতিথি

ভোরবেলা ঘুম ভাঙতেই দেখি, একজন লোক
আমার চেয়ারে দিব্যি বেপরোয়া বসে আছে। চোখ দুটো তার
আমাকে পরখ করে নিচ্ছে যেন, ঠোঁটে মৃদু হাসি। আমি তাকে
প্রশ্ন করি, কে আপনি এই সাত সকালে আমার
ঘরে বসে আছেন এত্তেলা না দিয়েই? এরকম আচরণ
ভদ্রোচিত নয় মোটে। আগন্তুক বিন্দুমাত্র বিব্রত না হয়ে
চেয়ারে থাকেন বসে খানিক আয়েশে, টেবিলের
বুক থেকে সহজে কুড়িয়ে নেন জীবনানন্দের ‘মাল্যবান।‘

আমাকে নিশ্চুপ দেখে বইটির পাতা
ওল্টাতে ওল্টাতে সেই অনাহুত অতিথি বলেন, ‘কী ব্যাপার,
বোবা হয়ে গেলে না কি? মুখ থেকে কথাই গায়েব? শোনো তবে,
আমি কেউকেটা নই কেউটেও নই, আমি হই
ভবঘুরে একজন, লোকে বলে আমি এই সমাজের বাতিল আপদ,
আমি হই সামান্য মানুষ, আমি হই
লালনের আখড়ার গানে-পাওয়া নিরীহ বাউল,
আমি হই তোমার মনের মানুষ হে ধূলিরঙ নাগরিক।
৭.১১.২০০০